আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের উত্তরসূরির খোঁজে রোববার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাময়িক ফলে দেখা গেছে, মেরকেলের দল অল্প ব্যবধানে পিছিয়ে আছে। নির্বাচনের আগেই বিভিন্ন জনমত জরিপে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গিয়েছিল।
স্থানীয় সময় রাত ৯টা ১০ মিনিটে প্রকাশিত সাময়িক ফলে দেখা যাচ্ছে, সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এসপিডি) বিদায়ী চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের সিডিইউ/সিএসইউ দলের চেয়ে ১.২ শতাংশ ভোটে এগিয়ে আছে।
এই ফলে দেখা যাচ্ছে, সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এসপিডি) ২৫.৭ শতাংশ, ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ) ও তাদের জোটসঙ্গী ক্রিশ্চিয়ান সোশ্যাল ইউনিয়ন (সিএসইউ) ২৪.৫ শতাংশ, গ্রিন পার্টি ১৪.৩ শতাংশ, ফ্রি ডেমোক্রেটিক পার্টি (এফডিপি) ১১.৫ শতাংশ, অভিবাসনবিরোধী এএফডি ১০.৫ শতাংশ, লেফট পার্টি ৫ শতাংশ ও অন্যান্য দলগুলো ৮.৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে।
এর আগে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর প্রকাশিত বুথ ফেরত সমীক্ষার ফলাফলে দেখা গিয়েছিল সিডিইউ/সিএসইউ দল ও এসপিডি ২৫ শতাংশ করে ভোট পেতে যাচ্ছে। গ্রিন পার্টি পেতে যাচ্ছে ১৫ শতাংশ ভোট। ২০১৭ সালের নির্বাচনের তুলনায় এসপিডি প্রায় সাড়ে চার শতাংশ ভোট বেশি পেয়েছে। গ্রিন পার্টির ভোট বেড়েছে ৬ শতাংশের বেশি। চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মেরকেলের সিডিইউ দলের ভোট কমেছে প্রায় ৮ শতাংশ।
নেতাদের প্রতিক্রিয়া
এসপিডির চ্যান্সেলর প্রার্থী ওলাফ শলৎজ বলেছেন, ভোটাররা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে তারা ‘পরবর্তী চ্যান্সেলর’ হিসেবে তাকেই চান।
সিডিইউ/সিএসইউর চ্যান্সেলর প্রার্থী আরমিন লাশেট বলেছেন, খারাপ ফল সত্ত্বেও একটি নতুন সরকার গঠনের জন্য আমরা যতটুকু পারি চেষ্টা করে যাব। নির্বাচনের এমন ফলে আমরা সন্তুষ্ট হতে পারি না। আমরা রক্ষণশীলদের নেতৃত্বে একটি সরকার গঠনের চেষ্টা চালিয়ে যাব। কারণ জার্মানদের এখন এমন জোট প্রয়োজন, যেটা আমাদের দেশের আধুনিকায়নের জন্য দরকার।
গ্রিন পার্টির চ্যান্সেলর প্রার্থী আনালেনা বেয়ারবক বলেন গত নির্বাচনের চেয়ে ভোট বাড়লেও তার দল প্রত্যাশা অনুযায়ী ফল পায়নি বলে জানিয়েছেন।
আমরা আরও চেয়েছিলাম। আমরা তা পাইনি। এর একটা কারণ প্রচারণার শুরুতে আমরা কিছু ভুল করেছিলাম- আমারও ভুল ছিল, সমর্থকদের বলেন তিনি।
সারাদিনের চিত্র
স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। আট কোটি মানুষের এই দেশে ভোটারের সংখ্যা প্রায় ছয় কোটি।
ভোটাররা দুটি করে ভোট দিয়েছেন। একটি ভোট সরাসরি প্রার্থী নির্বাচনের, অপরটি পছন্দের দলকে। দ্বিতীয় তালিকায় দলীয় সমর্থনের অনুপাতের ভিত্তিতে সংসদে অর্ধেক আসনে প্রার্থী স্থির করা হয়। তবে কে চ্যান্সেলর হতে যাচ্ছেন তা আজই নির্ধারিত হবে না। পার্লামেন্টের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা চ্যান্সেলর নির্বাচিত করবেন।
২৯৯টি সংসদীয় এলাকায় সরাসরি নির্বাচন হয়েছে। অন্য আসনগুলো দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাত অনুযায়ী মীমাংসিত হয়। নিয়ম অনুযায়ী, দলগুলো তাদের ভোটপ্রাপ্তির সংখ্যাতত্ত্বের ওপর ভিত্তি করেও মনোনীত প্রার্থীদের পার্লামেন্টে পাঠাতে পারে। কোনো দল ৫ শতাংশের কম ভোট পেলে পার্লামেন্টে যাওয়ার গ্রহণযোগ্যতা হারাবে।
সংসদীয় নির্বাচনের মাধ্যমে নেতা নির্বাচনে ১৬টি রাজ্যের মানুষ ভোট দিচ্ছেন। এবারের নির্বাচনে ৪৭টি দল ৬ হাজার ২১১ জন প্রার্থী দিয়েছে। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ছয় হাজার।
সূত্র : ডয়চে ভেলে
বিএসডি/আইপি