আন্তর্জাতিক ডেস্ক
কিছুদিন আগে বাংলাদেশের একটি টিকাকেন্দ্রে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধী টিকা না দিয়েই শরীরে শুধু সূঁচ ঢুকিয়ে ইনজেকশন ফেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আর পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের একটি অঞ্চলে ভ্যাকসিনের নাম করে শুধু পানি দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। যার ভুক্তভোগী ছিলেন খোদ তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য ও টালিউড তারকা মিমি চক্রবর্তী।
এমনকি করোনার উৎপত্তিস্থল খ্যাত চীনেও ভুয়া করোনা টিকা প্রয়োগের খবর শোনা গেছে। এবার প্রায় একই ঘটনা ঘটল জার্মানিতেও। সেখানে করোনা প্রতিরোধী টিকার পরিবর্তে ইনজেকশনে স্যালাইনের পানি ঢুকিয়ে পুশ করেছেন এক নার্স।
জার্মান মিডিয়া ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি জার্মানির উত্তরাঞ্চলীয় লোয়ার স্যাক্সনির একটি শহরে ঘটনাটি ঘটেছে। এতে গেল ৫ মার্চ থেকে ২০ এপ্রিলের মধ্যে টিকা গ্রহণকারী আট হাজার ৫৫৭ জন প্রভাবিত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জানা যায়, গত এপ্রিলে করোনার টিকা প্রয়োগের বদলে স্যালাইন পানি দিয়েছিলেন ওই নার্স। তার আইনজীবীর দাবি, এমন ঘটনা মাত্র একবারই ঘটেছিল। দুর্ঘটনা ক্রমে ভ্যাকসিনের একটি শিশি ভেঙে ফেলেছিলেন সেই নার্স। আর এতেই খুব আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি। তখন ভয়ে ও চাকরি বাঁচাতে তাৎক্ষণিক টিকাগ্রহীতাকে স্যালাইন পানির টিকা দেন এই নারী।
আইনজীবীর দাবি, টিকার মধ্যেই স্যালাইন পানি যোগ করেছিলেন সেই নার্স। ফলে টিকা যে মোটেও দেওয়া হয়নি, তা কিন্তু নয়।
যদিও তদন্তকারীরা বলছেন, এরই মধ্যে কমপক্ষে ছয়বার করোনা টিকার নামে স্যালাইন প্রয়োগের কথা স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত নার্স। তদন্তকারীদের ধারণা, এখন পর্যন্ত আরও অনেকের শরীরেই স্যালাইনের টিকা দেওয়া হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরাও বলছেন, ওই নার্স আরও অনেককে স্যালাইন দিয়েছেন বলে আমাদের মনে হচ্ছে।
ভয়াবহ এ ঘটনায় অভিযুক্তকে ইতোমধ্যে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। এমনকি কেন তিনি এই কাজটি করলেন তা পরিষ্কার নয়। যদিও কিছুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করোনা টিকার কার্যকারিতা নিয়ে নিজের সংশয়ের কথা জানিয়েছিলেন অভিযুক্ত সেই নার্স।
জার্মানির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বলছেন, মানব দেহে স্যালাইন প্রয়োগের ফলে এমনিতে শরীরের কোনো ক্ষতি হবে না। তবে করোনারোধী টিকা শরীরে যে অ্যান্টিবডি তৈরির জন্য দেওয়া হয়, সেটি আর তৈরি হবে না। যেহেতু সেই সময় মূলত দেশের বয়স্ক নাগরিকরা টিকা পেয়েছিলেন। ফলে তারা এখনো সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকবেন।
অবশ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত সেই নার্সের এই কাণ্ডের পর অঞ্চলটিতে করোনার প্রকোপ বাড়তে দেখা যায়নি।
বিএসডি/এমএম