নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান কখনো যুদ্ধ করেনি এবং বাংলাদেশের অস্তিত্ব এবং স্বাধীনতায় বিশ্বাসী ছিলো না।
বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনীতে সেনাপ্রধান হয়, কিন্তু উপ সেনাপ্রধান কিন্তু কেউ হয় না। জেনারেল জিয়াউর রহমান….মুক্তিযুদ্ধে যারাই ছিলো বঙ্গবন্ধু সবাইকে খুব স্নেহ করতেন। কাজেই তার সংসারটা টিকিয়ে রাখার জন্য কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট থেকে ঢাকায় নিয়ে এসে উপ সেনাপ্রধান করে তাকে রেখেছিলো।’
‘সে (জিয়াউর রহমান) কখনো বাংলাদেশের অস্তিত্বে বিশ্বাস করতো না, স্বাধীনতায় বিশ্বাস করতো না। কারণ জিয়াউর রহমান পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর একজন হিসেবে পাকিস্তান থেকে সে সমস্ত অস্ত্র প্রেরণ করা হয়েছিলো সোয়াত জাহাজে সেই জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাস করতে গিয়েছিলা।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সব জায়গায় ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সংগ্রাম কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এবং সমস্ত জায়গায় একটা ব্যারিকেড সৃষ্টি করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। ঐতিহাসিক ৭ মার্চে ভাষণে গেরিলা যুদ্ধের সার্বিক প্রস্তুতির নির্দেশ তিনি দিয়েছিলেন। ওই ভাষণে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যা দরকার তার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়েই কিন্তু মানুষ সক্রিয় ছিলেন। জিয়াউর রহমান যখন সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র নামাতে চায় পাবলিক কিন্তু তাকে ঘেরাও দেয়।’
তিনি বলেন, ‘২৫ মার্চ যেহেতু পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আক্রমণ শুরু করে দেয়, রাজারবাগ পুলিশ, পিলখানা, ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর রোড..পুর্ব থেকে যেহেতু পরিস্থিতি ছিলো এবং একটি নির্দেশনা ছিলো এবং স্বাধীনতার যে আনুষ্ঠানিক ঘোষণাটা ছিলো সেটা ইপিআরের মাধ্যমেই সেটি প্রচার করে দেওয়া হয় যখন তারা আক্রমণ শুরু করে। তার পরবর্তীতে সেটা প্রচার করা হয়। এবং যে চারজন ওখানে ছিলো মেজর শওকতসহ তারা কিন্তু পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে ধরা পড়ে। অত্যাচার করে তাদের কিন্তু হত্যা করে।…জিয়া কিন্তু সেই সময় জাহাজ থেকে অস্ত্র নিতে গিয়েছিলো। ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধু ঘোষণা দেওয়ার পরও কিন্তু পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর একজন সামরিক অফিসার হিসেবে কাজ করছিলো। তার হাতেই চট্টগ্রামে আমাদের অনেক নেতাকর্মী যারা ব্যারিকেড দিচ্ছিল অনেকেই নিহত হয়েছে।’
‘জাতির পিতার ঘোষণাটা ২৬ তারিখ দুপুরবেলা চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের যিনি সাধারণ সম্পাদক হান্নান সাহেব তিনি প্রথম পাঠ করেন। এরপর আরও অনেকে পাঠ করেন। সে সময় সেখানকার নেতাদের মধ্যে একটা কথা উঠলো যদি এটা কোনো সামরিক অফিসারকে দিয়ে যদি পাঠ করানো যায়, তাহলে যুদ্ধ যে হয়েছে সেই একটা আবহ থাকবে। তখনই জিয়াউর রহমানকে সেখান থেকে নিয়ে আসা হয়।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তৎকালীন মেজর রফিক, তার বইয়ে যদি পড়েন তাতে স্পষ্ট লেখা আছে। প্রথমে তাকে বলা হয়, তিনি তখন পাকিস্তানিদের সাথে যুদ্ধ করছিলেন। তিনি বলেন, আমি যদি সরে যাই এটা তারা দখল করে নেবে। এরপর জিয়াকে দিয়ে কালুর বেতার কেন্দ্র থেকে তাকে দিয়ে ঘোষণাটা পাঠ করানো হলো। প্রথমে পাঠ করতে কিন্তু জিয়ার অনেক আপত্তি ছিলো। যা হোক পরে তাকে দিয়ে পাঠ করানো হলো। সেভাবে জিয়ার মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ। এবং এ কথা সত্য যে জিয়াউর রহমান কোনো ফিল্ডে যুদ্ধ করেছে সেই ইতিহাস কিন্তু শোনা যায় না। আমাদের অনেক মুক্তিযোদ্ধারা আহত হয়েছে বিভিন্ন ফিল্ডে যুদ্ধ করেছে। কিন্তু তার যুদ্ধ করার কোনো ইতিহাস নেই। আমাদের চট্টগ্রামের নেতারা যারা সারাসরি যুদ্ধ করেছেন তারাই বলেছেন, যেখানে যুদ্ধ লাগতো সেখানে অন্তত ৩ মাইল দূরে জিয়া থাকতো। অস্ত্র হাতে কখনো যুদ্ধ করেনি। হ্যাঁ, সেই তাকে নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছিলো কিছুদিনের জন্য কিন্তু যুদ্ধ করে নাই।’
বিএসডি/এমএম