নিজস্ব প্রতিবেদক
আওয়ামী লীগের একটি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জড়িয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’। রোববার (১০ নভেম্বর) তারা এ বিষয়ে একটি সংবাদ সম্প্রচার করেছে। সংবাদে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ ক্র্যাক্স ডাউন অন ট্রাম্প সাপোর্টার্স আফটার হি ডিক্রাইস এন্টি-মায়নোরিটি অ্যাটাকস (সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার নিন্দা জানানোর পর বাংলাদেশে ট্রাম্পের সমর্থকদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে)।’
ভারতীয় গণমাধ্যমের এমন সংবাদকে ভুয়া বলে দাবি করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রেস উইং- ফ্যাকটস।
রোববার (১০ নভেম্বর) দিনগত রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং (সিএ প্রেস উইং) ফ্যাকটস-এর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ দাবি করা হয়।
এতে বলা হয়, রাজধানীতে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনার অভিযোগে রোববার আওয়ামী লীগের কয়েক ডজন নেতাকর্মীদের ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা শেখ হাসিনা তার সমর্থকদের ডোনাল্ড ট্রাম্পের পোস্টার বহন করার এবং গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার নির্দেশ দেন। এ কারণে তারা সেগুলো বহন করছিল। আটকরা পুলিশকে বলেছে, তারা মার্কিন রাজনীতি অনুসরণ করে না, শুধু হাসিনার নির্দেশে ট্রাম্পের পোস্টার বহন করেছিল।
প্রেস উইং আরও জানায়, শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে কিছু ভারতীয় সংবাদপত্র ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান নিয়ে আক্রমণাত্মকভাবে ভুল তথ্য প্রচার করছে। তারা বিপ্লবোত্তর দিনগুলোতে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনাগুলোকে ব্যাপকভাবে অতিরঞ্জিত করেছে। আজকে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের গ্রেপ্তারের ঘটনায়ও তারা একইভাবে অতিরঞ্জিত করেছে।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, সম্প্রতি ভারত থেকে শেখ হাসিনা তার নেতাকর্মীদের নতুন একটি বিক্ষোভের নির্দেশনা দেওয়ার কল রেকর্ড ভাইরাল হয়েছে। এতে তিনি নেতাকর্মীদের মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবিসহ প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ করতে বলেন। যদি তারা বাধাপ্রাপ্ত হয় সেগুলোর ছবি-ভিডিও তুলে তাকে পাঠাতে বলেছেন। তিনি সেটা ট্রাম্পকে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করবেন। নির্দেশনা মেনে আওয়ামী লীগের কর্মীরা শনিবার (৯ নভেম্বর) রাতে মিছিলের প্রস্তুতি নেয়। এসময় মোট ৫০ জনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
পুরো ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সূত্র ঢাকা পোস্টকে জানায়, মিছিলটি ছিল নূর হোসেন দিবসের নামে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ফিরে আসার চেষ্টা। ভারতের গণমাধ্যমের এই প্রতিবেদন পূর্বপরিকল্পিত। শেখ হাসিনার নির্দেশে ও বিনিয়োগে এ প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। শেখ হাসিনার ফাঁস হওয়া ফোনালাপ থেকে এটা স্পষ্ট যে ট্রাম্পকে দেখানোর জন্যই আওয়ামী লীগের কর্মীরা তার ছবি নিয়ে মাঠে নেমেছিল। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক কামনা করে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ভারতীয় মিডিয়া এমন প্রতিবেদন প্রচার করেছে।