নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) বিভিন্ন বিল নথিগুলোর বিল প্রদানের আগে ডিএনসিসির নিরীক্ষা বিভাগ থেকে প্রয়োজনীয় নিরীক্ষা কার্যক্রম সম্পাদনের নির্দেশ দিয়েছে সংস্থাটি।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে ডিএনসিসির সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক এ বিষয়ে একটি অফিস আদেশ জারি করে এ নির্দেশনা দেন।
ডিএনসিসির সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক জানান, সরকারি অডিট দল কর্তৃক অডিট আপত্তির পরিমাণ কমানো, কাজের স্বচ্ছতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন বিভাগের বিল নথিগুলোর বিল প্রদানের আগে ডিএনসিসির নিরীক্ষা বিভাগ থেকে প্রয়োজনীয় নিরীক্ষা কার্যক্রম সম্পাদনা করে নিতে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
এর আগে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন বিল, ভাউচারের দুর্নীতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ঢাকা পোস্ট। সেখানে উল্লেখ করা হয়, সকালের নাস্তা ও দুপুরের খাবার বিল ছাড়াও ঢাকা উত্তর সিটির কর্মকর্তারা খাওয়ার জন্য প্রতি কেজি বিস্কুট কিনছেন ৩৬০০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতি কেজি কাজুবাদাম কিনছেন ৩১৫০ টাকায়। যা বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি অস্বাভাবিক। এভাবে বেশি দাম দেখিয়ে ভাউচার করে অর্থ লোপাট করা হতো ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে (ডিএনসিসি)। এমন লোপাটের সঙ্গে জড়িত ছিলেন ডিএনসিসির কর্মকর্তারা।
এছাড়াও ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে আগের সব প্রথা ভেঙে প্রথমবারের মতো ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে মুন্সীগঞ্জের একটি ব্যয়বহুল রিসোর্টে অনুষ্ঠিত হয় ডিএনসিসির বোর্ড সভা। সেখানে ডিএনসিসির সব কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা দু’দিন অবস্থান করেন। ঢাকা থেকে যাতায়াত করা হয় এসি বাসে। সেখানে সব খরচ বাবদ সিটি কর্পোরেশনের তহবিল থেকে খরচ করা হয়েছে ৬৪ লাখ ৮১ হাজার ২৬৫ টাকা।
শুধু রিসোর্টে বোর্ড সভা বা বনভোজন নয়, জাতীয় শোক দিবস, মেট্রোরেল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, জেলহত্যা দিবসের আয়োজনের ব্যয়ের পুরোটাই দেখানো হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সমাজকল্যাণ ও বস্তি উন্নয়ন খাত থেকে। সংস্থাটি এসব খাতে সর্বমোট ব্যয় দেখিয়েছে ২ কোটি ৬৪ লাখ ৩৯ হাজার ২২৬ টাকা।
নথি থেকে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বনানী কবরস্থানে আগমন উপলক্ষ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন শুধু প্যান্ডেল, গেট, লাইট বাবদ খরচ দেখিয়েছে ৪৯ লাখ ১১ হাজার ৬৮০ টাকা।
এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধা ও পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে খরচ দেখানো হয়েছে ৪০ লাখ ৩০ হাজার ৬৮১ টাকা, মেট্রোরেল উদ্বোধন অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের এলাকায় ব্র্যান্ডিং সংক্রান্ত কাজ বাবদ ব্যয় দেখানো হয়েছে ৪১ লাখ ২১ হাজার ৬০০ টাকা। এসব অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত খরচ দেখিয়ে ভুয়া ভাউচার বানিয়ে বড় অঙ্কের টাকা তুলে নিয়েছেন অসাধু কর্মকর্তারা।