শাদমান ইয়াসার শাদাব
বর্তমান সময়ে অন্যতম আলোচিত বিষয় হলো “ডিপ্রেশন ” বা ” হতাশা “বিশ্বে ডিপ্রেশনের ভুক্তভোগী অনেক মানুষ। কর্মক্ষেত্র, পারিবারিক, শিক্ষাক্ষেত্র কিংবা সামাজিক কোনো না কোনো ক্ষেত্রে মানুষ ডিপ্রেশনে ভোগে। করোনাকালীন সময়ে এর হার আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, “প্রতি তিন জনের মধ্যে অন্তত এক জন বছরের কোনো এক সময় ছোট-বড় কোন একটি মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে। প্রায় একই রকমের তথ্য চীন বা অস্ট্রেলিয়াতেও দেখা গেছে।” অর্থাৎ প্রতি ৩ জন মানুষের মধ্যে ১ জন মানুষ মানুষিক ভাবে বিপর্যস্ত। বাংলাদেশেও এর হার কম নয়। বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানুষিক দুশ্চিন্তা এবং সেই দুশ্চিন্তা থেকে আত্মহত্যার পরিমাণ অনেক। করোনার মধ্যে এর তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনার মধ্যে বাংলাদেশে প্রায় ১৫১ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে মানুষিক দুশ্চিন্তা থেকে। যেসব শিক্ষার্থীরা আত্মহত্যা করেছেন তাদের মধ্যে ৭৩ জন স্কুল শিক্ষার্থী, ২৭ জন কলেজ শিক্ষার্থী,২৯ জন মাদ্রাসার এবং ৪২ জন বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী রয়েছেন। গত মাসের শেষ সপ্তাহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা করেন৷ বিশেষজ্ঞ দের মতে এর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে ক্যারিয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তা, পারিবারিক ভাবে মেন্টাল সাপোর্টের অভাব, পড়াশোনা নিয়ে দুশ্চিন্তা, প্রেমঘটিত বিষয় ইত্যাদি। এইসব বিষয়ের জন্যেই বেশির ভাগ শিক্ষার্থী আত্মহত্যার মতো পথ বেছে নিয়েছে। তবে এই হার কমানোর জন্যে নানাধরণের উদ্দ্যেগ গ্রহণ করা আবশ্যক বলে মনে করেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে যদি কোনো শিক্ষার্থী টানা ২ সপ্তাহ মন খারাপে ভোগে, পছন্দের কাজে অনিহা জন্মায়, খাবার গ্রহণে অরচি, ঘুমে ব্যাঘাত ইত্যাদি সমস্যায় ভোগে তাহলে অতি দ্রুত মনোচিকিৎসক এর শরণাপন্ন হতে হবে। এছাড়াও নৈতিক শিক্ষার উপর গুরুত্ব দিতে হবে। পারিবারিক ভাবে মানুষিক সমর্থন বৃদ্ধি করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দিতে হবে যিনি হতাশা গ্রস্ত শিক্ষার্থীদের কাউন্সিলিং করতে পারবে। সর্বোপরি ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। তবে “ডিপ্রশন” নামক ভয়াবহ ব্যাধীর হাত থেকে শিক্ষার্থী সমাজ কে রক্ষা করা যাবে।
শিক্ষার্থী আইন ও বিচার বিভাগ
বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি, নাটোর।