পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো ইয়াছিন গতকাল সকালেও নিজ কার্যালয়ে বসে হকারদের মধ্যে সংবাদপত্র ভাগ করে দেন। হকাররা তাঁর কাছ থেকে পত্রিকা নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় চলে যান। সকাল সাতটার দিকে তাঁর কার্যালয়ের সামনে একটি মাইক্রোবাস এসে দাঁড়ায়। মাইক্রোবাসটি থেকে তিন ব্যক্তি নেমে নিজেদের ডিবি পরিচয় দিয়ে ইয়াছিনের নাম-পরিচয় জানতে চান। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে বলে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে ঢাকামুখী সড়ক ধরে চলে যান।
ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন পত্রিকার হকার মো. আজিজ। তিনি বলেন, মাইক্রোবাসটিতে ছয়-সাতজন বসে ছিলেন। তাঁদের গায়ে ডিবির জ্যাকেট ছিল। এমনকি যে তিনজন ইয়াছিনকে তুলে নিয়ে যান, তাঁদের দুজনের গায়ে ডিবি লেখা জ্যাকেট ছিল।
ঘটনার পর থেকে ইয়াছিনের ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরটিতে কল করলেই ব্যস্ত দেখায়। আজ সোমবার বেলা দুইটার দিকে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে ওই নম্বরে যোগাযোগ করেও ব্যস্ত পাওয়া গেছে। ঘটনার পর থেকে ইয়াছিনের মেজ ভাই মাস্টার মো. মাহবুবুর রহমানসহ পরিবারের লোকজন সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে যোগাযোগ করলেও কোথাও তাঁর সন্ধান মেলেনি।
মাহবুবুর রহমান বলেন, তাঁর ভাইকে তুলে নেওয়ার পর তাঁরা সীতাকুণ্ড থানা, পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), ডিবি ও আশপাশের তিনটি থানায় খোঁজ করেছেন। কিন্তু কেউ এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। এখন তাঁর ভাইয়ের স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়েসহ পরিবারের সবাই উৎকণ্ঠায় রাত কাটিয়েছেন। সকালে সীতাকুণ্ড থানা-পুলিশ ও দুপুরে ডিবি পুলিশের সদস্যরা তাঁদের বাড়িতে এসে বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছেন।
চট্টগ্রাম গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেশব চক্রবর্তী বলেন, তাঁরা ইয়াছিন নামের কাউকে গ্রেপ্তার করেননি।
সীতাকুণ্ড থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ইয়াছিনের ফোন নম্বরটিতে কল দেওয়া হলে ব্যস্ত দেখাচ্ছে। মূলত ফোনটি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। ফলে জায়গা চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। তাঁরা ইয়াছিনকে উদ্ধারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে তাঁরা সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু ওই ফুটেজ স্পষ্ট নয়। তবু ওই ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। তবে আদৌ ডিবি কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তুলে নিয়ে গেছে কি না, তা নিশ্চিত নন তাঁরা। ইয়াছিনের বিরুদ্ধে সীতাকুণ্ড থানায় কোনো মামলা নেই বলে জানান তিনি।
বিএসডি/ এলএল