আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বশেষ শ্বেতাঙ্গ প্রেসিডেন্ট ফ্রেডরিক উইলিয়াম ডি ক্লার্ক মারা গেছেন। ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াইয়ের পর বৃহস্পতিবার ৮৫ বছর বয়সে মারা গেছেন তিনি।
দেশটিতে নেলসন ম্যান্ডেলার নেতৃত্বাধীন কৃষ্ণাঙ্গ সরকারের কাছে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন ক্লার্ক। দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদ বৈষম্য নিরসনে ভূমিকার জন্য বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সুনাম ছিল তার।
দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদের অবসান এবং গণতান্ত্রিক রূপান্তরে ভূমিকার জন্য ১৯৯৩ সালে নেলসন ম্যান্ডেলার সাথে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। পরের বছর দেশটিতে অনুষ্ঠিত প্রথম বহুদলীয় নির্বাচনে আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের (এএনসি) জয়ে ক্ষমতায় আসীন হন ম্যান্ডেলা।
কিন্তু বর্ণবৈষম্যের অবসানের পর গণতন্ত্রের পথে উত্তরণে ডি ক্লার্কের ভূমিকা নিয়ে পরবর্তী ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিতর্ক দেখা দেয়। ১৯৯৪ সালের বহুদলীয় নির্বাচনের পর দেশটিতে শুরু হওয়া রাজনৈতিক সহিংসতার লাগাম টানতে ব্যর্থ হওয়ায় অনেক কৃষ্ণাঙ্গ ক্লার্কের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।
অন্যদিকে, ক্লার্কের ন্যাশনাল পার্টি দীর্ঘদিন দক্ষিণ আফ্রিকা শাসন করেছে; শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদের অবসানের জন্য ডানপন্থী শ্বেতাঙ্গ আফ্রিকানদের কাছেও বিশ্বাসঘাতকের তকমা পান তিনি।
বৃহস্পতিবার সকালের দিকে ফ্রেডরিক উইলিয়াম ডি ক্লার্ক ফাউন্ডেশনের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট এফডব্লিউ ডি ক্লার্ক মেসোথেলিওমা ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াইয়ের পর আজ সকালে ফ্রেসনের নিজ বাসভবনে শান্তিপূর্ণভাবে মারা গেছেন।
চলতি বছরের মার্চে দক্ষিণ আফ্রিকার এই প্রেসিডেন্টের মেসোথেলিওমা ধরা পড়ে। মেসোথেলিওমা ক্যান্সারে সাধারণত ফুসফুসের আস্তরণের টিস্যু আক্রান্ত হয়।
ডি ক্লার্ক ফাউন্ডেশন বলছে, স্ত্রী এলিটা, সন্তান জ্যান, সুসান এবং তার নাতি-নাতনিদের মাঝে বেঁচে থাকবেন ডি ক্লার্ক। তার শেষকৃত্য আয়োজনের ব্যাপারে পরিবার যথাসময়ে ঘোষণা দেবে বলে জানানো হয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে ফুসফুসের অসুস্থতা নিউমোথোরাক্সের চিকিৎসা নিয়ে আসছিলেন ফ্রেডরিক উইলিয়াম ডি ক্লার্ক।
২০২০ সালে দেশটির একটি সম্প্রচারমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বর্ণবাদকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে মনে করেন না বলে মন্তব্য করার পর দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্যাপক ক্ষোভ দেখা যায়। যদিও বর্ণবাদকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করেছে জাতিসংঘ।
সূত্র: রয়টার্স।