জনসাধারণ এবং পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে দূর পাল্লার বাস চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে লঞ্চ এবং ট্রেন চালুর বিষয়ে এখনও কোনো আলোচনা নেই। লঞ্চ চালুর দাবিতে মালিক-শ্রমিকেরা আন্দোলনে যাচ্ছেন।
ঈদের পর মানুষের ঢাকায় গাদাগাদি করে আসার মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সীমিত পরিসরে দূর পাল্লার বাস চলাচল সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা তৈরির কাজ চলছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পেলে চলমান ‘লকডাউন’ বা বিধিনিষেধ শেষে আগামী ২৪ মে থেকে দূর পাল্লার রুটে বাস চালু হবে।
অন্যদিকে, চলমান বিধিনিষেধ আর বাড়ছে কিনা- সে বিষয়ে শনিবার (২২ মে) সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। নতুন কোনো নির্দেশনা না থাকলে সোমবার থেকে পুরোদমে অফিস-আদালত খুলবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে কঠোরভাবে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খোন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, দূর পাল্লার বাস বন্ধ থাকায় পরিবহনখাতের মালিক-শ্রমিকেরা মারাত্মক সংকটে রয়েছেন। বিশেষ করে শ্রমিকরা পথে বসেছেন। এজন্য তারা দূর পাল্লার বাস চালুর দাবি জানিয়ে আসছেন। এ নিয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগও করছেন।
তিনি দাবি করে বলেন, দূর পাল্লার বাস বন্ধ থাকায় মানুষ প্রাইভেটকার, ট্রাক এবং মাইক্রোবাসে গাদাগাদি করে ঢাকায় আসছেন। ঈদের আগেও সেভাবে গেছেন। এতে করোনার ঝুঁকি আরও বাড়ছে। চলমান বিধিনিষেধ শেষে দূর পাল্লার বাস না ছাড়া হলে মালিক-শ্রমিকদের দাবির মুখে তারা কঠোর কর্মসূচি দেবেন।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে দূর পাল্লার বাস ছাড়তে অর্ধেক আসন ফাঁকা রাখাসহ ভাড়া নির্ধারিত হারের চেয়ে ৬০ শতাংশ বেশি নেওয়া এবং প্রতি যাত্রার শুরু ও শেষে জীবাণুনাশক দিয়ে বাস জীবাণুমুক্ত এবং পরিবহন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও যাত্রীদের বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধান, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে বলে জানা গেছে।
চলমান বিধিনিষেধের মধ্যে প্রথমে গণপরিবহন বন্ধ রাখা হলেও পরে জেলার ভেতরে বাস চলাচলের অনুমতি দেয় সরকার। এক্ষেত্রে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে বাস-মিনিবাস চলাচলের নির্দেশনা দেওয়া হয়। আর নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়।
অপরদিকে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চ চালাতে লঞ্চ-মালিক শ্রমিকেরাও আন্দোলনে যাচ্ছেন। শনিবার (২২ মে) সংবাদ সম্মেলনে তারা কর্মসূচি ঘোষণা দেবেন।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. বদিউজ্জামান জানান, বিগত ৫ এপ্রিল থেকে সরকার যাত্রীবাহী লঞ্চ বন্ধ রেখেছে। এতে নৌ সেক্টরে নিয়োজিত হাজার হাজার শ্রমিক-কর্মচারীর বেতন-বোনাস পরিশোধ করা মালিকদের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে। সেই আলোকে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
অন্যদিকে, সরকারের নির্দেশনার ওপর ট্রেন চলাচল শুরুর বিষয়টি নির্ভর করবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।