নিজস্ব প্রতিবেদক:
ময়মনসিংহে বাড়ছে সব নিত্যপণ্যের দাম। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ। প্রয়োজনের তাগিদে বাড়তি দামেই এসব পণ্য ক্রয় করলেও বাজারে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা।
তারা বলছেন, জীবনযাত্রার ব্যয় অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সব পণ্যের দাম বাড়লেও বাড়েনি তাদের আয়। বাড়তি দামে পণ্য ক্রয় করতে অনেকের টান পড়েছে সঞ্চয়ে আবার অনেকেই ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। তারা আরও বলছেন নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে খুব দ্রুত তারা বিপদে পড়বেন। তখন আর চলার উপায় থাকবে না।
নগরীর মেছুয়া বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কাঁচা মরিচ কেজি ২৮০-৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। ব্রয়লার মুরগির দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১৪৫টাকা থেকে বেড়ে এখন ১৯৫-২০০ টাকা। ডিমের দাম হালিতে দশ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০টাকা করে। বরবটি প্রতি কেজি খুচরা বাজারে ৭০-৮০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, শশা ৭০টাকা, প্রতিটি কুমড়া ৫০টাকা, কচু ৫০টাকা কেজি ও শিম ১২০ টাকা মূল্যে বিক্রি হচ্ছে।
চালের দাম পাইকারি বাজারে বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) বেড়েছে ৩০০-৩৫০ টাকা। খুচরায় কেজিতে বেড়েছে ৫-৮ টাকা। সব জিনিসিপত্রের দাম বেড়ে ক্রেতাসাধারণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। আয়ের সঙ্গে খরচের ভারসাম্য রাখতে গিয়ে কাটছাঁট করতে হচ্ছে প্রতিদিনের বাজার তালিকা। বেশ কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে পণ্যের দাম নিয়ে কথা বললে তারা জানান, এত বাড়তি খরচ কুলিয়ে উঠা সম্ভব হচ্ছে না। এর একটা নিয়ন্ত্রণ থাকা দরকার। তা নাহলে আমাদের অবস্থা খুব খারাপের দিকে যাবে।
রশিদ নামে একজন বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, নিত্যপণ্যের দাম যতই বাড়ুক প্রয়োজনের তাগিদে ক্রয় করতেই হবে। বাড়তি খরচ মেটাতে আমাদের মতো নিম্ন-মধ্যবিত্তদের সঞ্চয়ে হাত দিতে হচ্ছে। তবে এভাবে কতদিন? সঞ্চয় ফুরাতে সময় লাগবে না। তখন আমরা বিপদে পড়ে যাবো।
রিকশাচালক জসিম খান বলেন, আমাদের কথা কেউ চিন্তা করে না। সারাদিন যা পাই চাল, ডাল একটু সবজি কিনেই শেষ। ছেলে-মেয়েদের জন্য মাছ-মাংস কেনার টাকা থাকে না। যদিও মাঝে মধ্যে ব্রয়লার মুরগি কিনতে পারতাম এখন আর তাও সম্ভব হবে না।
দাম বৃদ্ধি নিয়ে ব্যবসায়ীরাও অসন্তুষ্ট। তারা বলছেন, আমরা প্রতিনিয়ত অনিশ্চয়তা নিয়ে ব্যবসা করছি। সব পণ্যের দাম বাড়তি। তাই অতিরিক্ত মাল কিনতে পাড়ছি না। অল্প অল্প করে অর্ডার করছি। না হয় হঠাৎ করে দাম কমে গেলে তখন লোকসান হবে। তাছাড়া দাম বৃদ্ধির ফলে ক্রেতাদের সঙ্গে প্রায়ই বাকবিতন্ডা হচ্ছে। বিক্রিও কিছুটা কমেছে।
বিএসডি/ফয়সাল