নিজস্ব প্রতিবেদক
সাম্প্রতিক সময়ে প্রেস ক্লাবের সামনে আন্দোলনরত নকল নবিশদের চাকরি জাতীয়করণের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট।
রোববার (২৭ অক্টোবর) সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন এবং সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, নকল নবিশরা ভূমি নিবন্ধনের দলিল সংরক্ষণের অপরিহার্য অংশ। তারা নিবন্ধিত জমির দলিল রেকর্ডের বালাম বইয়ে লেখার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বপালন করে। একজন নকল নবিশ এই বালাম বইয়ের একটি পাতা লেখার মঞ্জুরি হিসেবে মাত্র ২৪ টাকা পায়। একজন নকল নবিশের পক্ষে একদিনে ১০ থেকে ১২ পাতার বেশি লেখা সম্ভব হয় না। সেই হিসাবে মাসে সর্বোচ্চ ৩০০ পাতা লিখলেও তাদের মাসিক মজুরির পরিমাণ দাঁড়ায় ৭ হাজার ২শ টাকা, যা একজন মানুষের জীবনধারণ ব্যয় নির্বাহ করার ক্ষেত্রে কঠিন। অথচ বালাম বইয়ের সরবরাহ নিয়মিত না হওয়ায় এই সামান্য টাকাও নিয়মিত আয়ের কোনো নিশ্চয়তা নেই। নকল নবিশরা কানামুনা হিসাবে অর্থাৎ কাজ নাই তো মজুরি নাই হিসাবে জীবনের কর্মক্ষম সময় সরকারি দপ্তরে সেবা দেওয়ার জন্য ব্যয় করে। চাকরি স্থায়ী হওয়ার সুযোগ না পেলে চাকরির অবসানে কোনো আর্থিক সুবিধা না থাকায় অসুস্থতা বা বার্ধক্যে চরম অমানবিক এবং অসহায় অবস্থায় দিনযাপন করতে বাধ্য হয়। সম্মান ধারণ এবং জন্মদানে সরকারি ভূমি নিবন্ধন অফিসের নারী নকল নবিশদের নেই মাতৃত্বকালীন ছুটি বা সুবিধা। নকল নবিশদের এই অনিশ্চিত জীবন একটি মানবিক ও ন্যায্য সমাজকাঠামোর আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
তারা আরো বলেন, সরকারি কর্মচারীর তালিকায় নাম না থাকলেও একজন নকল নবিশকে প্রতিদিন সংশ্লিষ্ট ভূমি নিবন্ধন অফিসের অফিস সহায়ক এবং করণিক অনেক কাজ বিনা মজুরিতে করে দিতে হয়। সংশ্লিষ্ট ভূমি নিবন্ধন অফিসে করণিক পদ খালি হলে কর্মরত নকল নবিশদের মধ্যে থেকে জেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার রেওয়াজ ছিল। চাকরি স্থায়ী হওয়ার সেই আশায় নকল নবিশরা নামমাত্র টাকার বিনিময়ে বছরের পর বছর শ্রম দিয়ে যায়। অথচ বিগত সরকারের দুর্নীতিগ্রস্ত প্রশাসন স্থায়ী চাকরি হওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে বছরের পর বছর সেবা দিয়ে যাওয়া এইসব নকল নবিশদের বাদ দিয়ে বাইরে থেকে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করেছে।
বিবৃতিতে নকল নবিশদের চাকরি জাতীয়করণ এবং তাদের লেখার দর বাড়ানোর দাবি জানানো হয়।