সাভার প্রতিনিধিঃ
কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগে সাভার সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানাকে (৩৩) ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল সোমবার রাতে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোর্ট ইন্সপেক্টর মিজবাহ উদ্দীন। ধর্ষণের মামলায় দুপরে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হলে বিকেলে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুন্নাহার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ভুক্তভোগী কিশোরী পিতা-মাতাসহ সাভারের রাজাবাড়ী এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছে। অন্যদিকে অভিযুক্ত সোহেল রানা সাভার সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি। এ ঘটনার পর তাকে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে তাকে কেন্দ্রীয়ভাবে আজীবনের জন্য বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়। এর আগে, গত সেপ্টেম্বর ২০২১ সালের দিকে ওই কিশোরীর সাথে প্রথম পরিচয় হয় সোহেল রানার। একপর্যায়ে রাস্তায় যাতায়াতের সময় ভুক্তভোগীকে অনৈতিক আকার-ইঙ্গিত প্রদর্শন করত সোহেল রানা। পরে প্রেমের প্রস্তাব দেয় ওই কিশোরীকে। ভুক্তভোগী তা প্রত্যাখ্যান করলে গত অক্টোবর ২০২১ সালে জোরপূর্বক সোহেল রানার ভাড়া করা ফ্ল্যাটে নিয়ে যায়। তখন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে এবং এসময় অশালীন ছবি ও ভিডিও ধারণ করে রাখে। সেই ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে ওই কিশোরীকে এতদিন ধরে ধর্ষণ করে আসছিল অভিযুক্ত ছাত্রনেতা সোহেল রানা। গত ১৪ ফেব্রুয়ারী সোহেল রানা তার সাথে সময় কাটানোর প্রস্তাব দিলে তা প্রত্যাখ্যান করে। পরে বিয়ের ব্যাপারে পরিবারের সাথে কথা বলতে বলেন কিশোরী। সোহেল রানা তাকে বিয়ে করবে না বলে জানিয়ে দেন। পরে ১৫ ফেব্রুয়ারী সোহেল রানা গতিরোধ করে একই কায়দায় জোরপূর্বক ফ্ল্যাটে নিয়ে ধর্ষণ করে ওই কিশোরীকে। এতে কিশোরী অসুস্থ হয়ে পরলে বাসায় এসে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এসময় কিশোরীর মা আত্মহত্যার কারণ জানতে চাইলে বিষয়টি খুলে বলে। পরে গত ২৩ ফেব্রুয়ারী বুধবার রাতে সাভার মডেল থানায় ওই কিশোরীর মা বাদী হয়ে সোহেল রানাকে প্রধান আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা (নং-৬৫) দায়ের করেন। ধর্ষণের অভিযোগে সোহেল রানার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হওয়ার পর পরই ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতির পদ থেকে তাকে অব্যহতি দেয় উপজেলা ছাত্রলীগ। এরপর তিনি পলাতক ছিলেন। এঘটনার পর র্যাব-৪ এর একটি গোয়েন্দা দল পুলিশের পাশাপাশি আসামী গ্রেফতারে ছায়া তদন্ত শুরু করে। পরবর্তীতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রবিবার ভোর সকালে চট্টগ্রাম শহর থেকে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব-৪। উল্লেখ্য, সোহেল রানার বিরুদ্ধে গত বছরে ঢাকার ধামরাইয়ে অন্য একজন কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আরেকটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করে ভুক্তভোগী পরিবার। সেই মামলায় সোহেল রানাকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে ঢাকা জেলা পিবিআই।
বিএসডি/ এফএস