খেলাধূলা প্রতিবেদক:
খেপেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ঢাকায় ফেরার টিকেটও কেটে ফেলেছিলেন। বিকেল সাড়ে ৫টায় ফ্লাইট ছিল তার। সে উদ্দেশে দুপুরের পর হোটেল ছেড়ে রওনা হয়েছিলেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের নেতৃত্ব হারানো এই ক্রিকেটার। তবে শেষ পর্যন্ত, টিম ম্যানেজমেন্টের লোকজন বুঝিয়ে-শুনিয়ে যেতে দেননি তাকে।
রোববার চট্টগ্রামের টিম হোটেলের (পেনিনসুলা) নিচে ঘটে অনাকাঙ্ক্ষিত এক ঘটনা। স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে বিমানবন্দরের উদ্দেশে বিকাল সোয়া চারটার দিকে রওনা হয়েছিলেন মিরাজ। কারণ, দলের সঙ্গে থাকতে চান না। কিন্তু তাকে আপাতত আটকাতে পেরেছে চট্টগ্রাম ফ্র্যাঞ্চাইজি।
অথচ দুই দিন আগেও চট্টগ্রামের ডেরায় কতো সুখিই না দেখা গিয়েছিল মিরাজকে। খুলনা টাইগার্সের প্রথম উইকেট তুলে নিয়ে দলের সব সদস্যদের নিয়ে ভারতের তেলুগু চলচ্চিত্র পুস্পার অনুকরণে মাঠে নেচেছিলেন তারা। নাচে নেতৃত্বও দিয়েছিলেন স্পিন অলরাউন্ডার। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই বদলে যায় সব। নেতৃত্ব হারান মিরাজ।
আগের দিন আচমকাই জানা যায়, বদল হয়েছে চট্টগ্রামের অধিনায়ক। মূলত, ম্যাচে টস করতে নাঈম ইসলামকে দেখার পরই শুরু হয় নানা গুঞ্জন। যদিও মিরাজ দলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন দারুণভাবেই। প্রথম চার ম্যাচের দুটিত জিতিয়েছেন দলকে।
আলোচনা শুধু মিরাজের নেতৃত্ব হারানো নিয়ে নয়। বিপিএলের মাঝপথে দেশে ফিরে গেছেন চট্টগ্রামের কোচ পল নিক্সন। চট্টগ্রাম কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছে, দেশে ফিরে গেলেও নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে তার সঙ্গে। তার নির্দেশনা মেনেই বদল হয়েছে অধিনায়কের।
মূলত মিরাজের সঙ্গে দ্বন্দ্বটা হয়েছে চট্টগ্রাম দলের প্রধান অপারেটিং অফিসার (সিওও) ইয়াসির আলমের। তার বিপক্ষে সরাসরি আঙুল তুলেছেন মিরাজ, ‘ও (ইয়াসির) যদি দলে থাকে, আমি থাকব না। ইয়াসির ভাই যদি না থাকেন, তাহলে আমি দলে খেলব, নয়তো খেলব না। …পুরাই স্পষ্ট।’
দলের সঙ্গে তার ভুল বোঝাবুঝির মূলে ইয়াসির আছেন বলে অভিযোগ করেন মিরাজ, ‘কোচের ব্যাপারে (ইয়াসির) গণমাধ্যমে যে বিবৃতি দিয়েছেন, সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। আপনি দরকার পড়লে কোচকে ফোন করে দেখেন। আমার সঙ্গে ৩০ মিনিটের মতো কথা হয়েছে। ইয়াসির যে বিবৃতি দিয়েছে সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ইয়াসিরই সবচেয়ে বড় অপরাধী। আমি নিশ্চিত, (চট্টগ্রামের) মালিককে যেভাবে বলা হচ্ছে, উনি সেভাবেই করছেন। উনি এখানে সংশ্লিষ্ট নন।’
বিষয়গুলো বিসিবিতেও জানিয়েছেন মিরাজ। এর মধ্যেই বোর্ডের প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বরাবর চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। যদিও সেখানে দল ছেড়ে ঢাকায় ফেরার কারণ হিসেবে মায়ের অসুস্থতার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।
এদিন দুপুরে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দলের অনুশীলন থাকা সত্ত্বেও তাতে যোগ দেননি মিরাজ। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে হোটেল ছাড়তে চেয়েছিলেন। পরে অবশ্য চট্টগ্রামের লজিস্টিক ম্যানেজার হীরক নিচে নেমে তাকে বুঝিয়ে হোটেলে ফেরত নিয়ে যান। দ্বন্দ্ব দূর করতে মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম টিম ম্যানেজমেন্ট।