৭৫ ওভারে লক্ষ্য ২৭৩ রান। টেস্টের শেষ দিনে এই লক্ষ্য তাড়া করে কি জয় পাওয়া সম্ভব? এ লক্ষ্য পেরোনো সম্ভব কি সম্ভব নয়, সেটা পরের ব্যাপার। আগে তো লক্ষ্যটা তাড়া করে জয়ের মনোভাব থাকতে হবে! লর্ডস টেস্টের শেষ দিনে ইংল্যান্ডের এ লক্ষ্য তাড়া করে জয়ের ইচ্ছাই ছিল না বলে মনে করেন অনেকে। এ দলে আছেন অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি লেগস্পিনার শেন ওয়ার্নও। টেস্টের পঞ্চম দিনে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইংল্যান্ডের নেতিবাচক মনোভাবের সমালোচনা করেছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক স্পিনার এবং বর্তমানে ক্রিকেট বিশ্লেষক ও ধারাভাষ্যকার।
ওয়ার্ন ইংল্যান্ড দলের মনোভাবের সমালোচনা করেছেন টুইট করে। তাঁর টুইটের মূল কথা ছিল এ রকম—বাস্তবিক অর্থেই জো রুটরা ম্যাচটি জেতার কোনো চেষ্টাই করেননি। আর ম্যাচটিও তাই নিষ্প্রাণ ড্র হয়েছে। ২৭৩ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৭০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৭০ রান করেছে ইংল্যান্ড।
লর্ডসে ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড প্রথম টেস্টের শেষ দিনের খেলা দেখে হতাশ ওয়ার্ন গতকাল টুইট করেছেন, ‘লক্ষ্যটা খুবই নাগালের মধ্যে ছিল। এমন একটি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে কখনোই জয়ের কোনো মনোভাবই দেখায়নি তারা। ইংল্যান্ডের এমন নেতিবাচক মনোভাব দেখে আমি খুবই হতাশ হয়েছি।’
অনেকেই বলতে পারেন টেস্টের শেষ দিনে ওভার প্রতি ৩.৬৪ রান তাড়া করতে গিয়ে ইংল্যান্ড হেরে যাওয়ার ঝুঁকি কেন নেবে! কিন্তু ইংল্যান্ডের ওপেনিং জুটির খেলা দেখে ঝুঁকি নেওয়া বা না নেওয়ার বিষয়ে কে কথা বলবেন! ওয়ার্নের মতো অনেকেই হয়তো বলবেন, এটা নেতিবাচক মনোভাব।
ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার ররি বার্নস ও ডম সিবলির ব্যাটিং দেখে কখনোই মনে হয়নি যে তাঁরা জিততে চান। প্রায় ৫ ঘণ্টা ক্রিজে কাটিয়ে সিবলি ২০৭টি বল খেলেছেন। মাঠ ছেড়েছেন ৬০ রানে অপরাজিত থেকে। অন্য দিকে বার্নস আউট হয়েছেন ৮১ বলে ২৫ রান করে।
রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ৩৭ ওভারে ইংল্যান্ড দলের স্কোরিং শট ছিল মাত্র ৩০টি। এর মধ্যে ২১টি শটে নিয়েছে ১ রান করে। চার মারতে পেরেছে মাত্র ৬টি। ৩৭ ওভারে ইংল্যান্ড রান তুলেছে ২ উইকেটে ৬২।
দ্বিতীয় ইনিংসে ৭১ বলে ৪০ রান করা ইংল্যান্ড অধিনায়ক জো রুট অবশ্য তাঁর দলের মনোভাবকে ঠিকই বলেছেন, ‘পিচ শ্লথ আর কঠিন ছিল। টাইমিং করাটাই কঠিন ছিল। আপনাকে লক্ষ্য আর সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য কত ওভার আছে, সেদিকে তাকাতে হবে। এটা এত সহজ বিষয় ছিল না।’
ইংল্যান্ডের মনোভাব নিয়ে যাঁরা সমালোচনা করেছেন, তাঁদের উদ্দেশে রুট বলেছেন, ‘এটা ঠিক যে কিছু মানুষকে এটা হতাশ করেছে। কিন্তু আমাদের দিক থেকে বলব, আমরা এখনো খুব ভালোভাবেই এই সিরিজে আছি। এই ম্যাচ আমরা ড্র করেছি এবং এজবাস্টনে আমাদের সিরিজ জয়ের ভালো সম্ভাবনা আছে।’
দুই ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট এজবাস্টনে শুরু হবে ১০ আগামী পরশু। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ শেষ করে নিউজিল্যান্ড দল চলে যাবে সাউদাম্পটনে। সেখানে তারা ভারতের বিপক্ষে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলতে নামবে ১৮ জুন।