নিজস্ব প্রতিবেদক, পটুয়াখালী
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইকে কেন্দ্র করে এমপির উপস্থিতিতে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ইউনিয়ন পরিষেদের চেয়ারম্যান, ছাত্রলীগ, যুব লীগকর্মী ও সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন।
সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে টিএন্ডটি রোডস্থ উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে এ সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনার পরপর দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি মিছিলে শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় শহরে পুলিশের অতিরিক্ত টহল বাড়ানো হয়েছে।
গুরুতর আহত বগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহামুদ হাসান (৩৫), যুবলীগ নেতা জসিম (৩৪), মিজান মোল্লা (৪০), সুমন (৩০) ও আশ্রাফকে (২৮) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আসন্ন বাউফল পৌরসভার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য সোমবার বিকেল ৩টায় আওয়ামী লীগ কার্যালয় জনতা ভবনে বিশেষ বর্ধিত সভা আহ্বান করা হয়। ওই সভায় স্থানীয় এমপি আসম ফিরোজ, দলের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার এবং দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, সভার একপর্যায়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর হোসেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদের মোবাইলে কল করে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেওয়ার কথা বলেন। তখনই বক্তব্য দিতে চান এমপি ফিরোজের ভাতিজা এবং দলের বহিষ্কৃত নেতা এনামুল হক আলকাস মোল্লা। আলকাসকে বক্তব্য দিতে নিভৃত করায় আলকাস সাধারণ সম্পাদক মোতালেবের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে বিএনপি ও জাতীয় পার্টি থেকে আওয়ামী লীগে আসা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম ফারুকের সাঙ্গপাঙ্গরা বগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসানের ওপর হামলা করে তাঁকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। তখন চেয়ারম্যান হাসানের লোকজন তাঁকে উদ্ধারে এগিয়ে এলে তাদেরও কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করা হয়। হাসান দলের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব হাওলাদের ছেলে।
এ সময় ওই দৃশ্য ধারণ করতে গিয়ে মাইটিভির বাউফল প্রতিনিধি ও বাউফল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক অহিদুজ্জামান ডিউক ও যুগান্তর প্রতিনিধি জিএম মশিউর রহমান মিলন আহত হন। ছবি তোলার কারণে সাংবাদিক মিলনের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এ খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বর্তমানে শহরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার বলেন, এমপি আসম ফিরোজের ইন্দোনেই এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। আমার নেতাকর্মীদের পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। আমার ব্যক্তিগত গাড়িতে হামলা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে এমপি আসম ফিরোজকে ফোন এবং খুদে বার্তা দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাউফল থানার ওসি আল মামুন বলেন, ‘পরিস্থিতি এখন শান্ত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে শহরে পুলিশ টহল বাড়ানো হয়েছে।’
এসএ