আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে কথা হয় সানির সঙ্গে। সানি জানায়, শুধু অর্থ আয়ের জন্য জাতীয় পতাকা বিক্রি করে না, জাতীয় পতাকার জন্য ভালোবাসা থেকেই সে এই কাজ করে।
কলেজছাত্র সানির ভাষায়, ‘জাতীয় পতাকা বিক্রি করে আয় করা আমার একমাত্র উদ্দেশ্য নয়। লাখো মানুষ এই পতাকার জন্য রক্ত দিয়েছে। কেউ আমার কাছ থেকে এই পতাকা কিনে যখন মাথায় বাঁধে, গায়ে জড়ায়, তখন কেমন জানি আমার একধরনের ভালো লাগা কাজ করে। এই ভালো লাগার বিষয়টি ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। কিন্তু আমি অনুভব করতে পারি।’
ছয় ভাইবোনের মধ্যে সানি চতুর্থ। সে বড় হয়ে আইনজীবী হতে চায়। তার বাবা হেদায়েত উল্লাহ। তিনি ভ্যানে করে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে প্রসাধনসামগ্রী বিক্রি করেন।
সানির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আট সদস্যের সংসার চালাতে তার বাবা হেদায়েত উল্লাহকে হিমশিম খেতে হয়। কিন্তু তিনি কষ্ট করে হলেও ছেলেমেয়েদের ভালো রাখতে চান।
পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে কলেজ বন্ধ থাকলে সানি ঢাকায় চলে আসে। মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডের তিন রাস্তার মোড়ে ফুচকা বিক্রি করে সে।
সানি বলে, ‘কলেজ বন্ধের সময় ঢাকায় এসে ফুচকা বিক্রি করতে আমার কোনো লজ্জা নেই। ফুচকা বিক্রির টাকা পরিবারের কাজে লাগে। আমার নিজের পড়াশোনার খরচও জোগাড় হয়ে যায়।’
পড়াশোনা করে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ব্যাপারে বেশ আত্মপ্রত্যয়ী সানি। সে জানায়, ছয় ভাইবোনের মধ্যে সেসহ চারজন পড়ালেখা করছে। তার বড় ভাই শাহিন মোল্লা স্থানীয় একটি কলেজে স্নাতক পর্যায়ে পড়ছেন। আর ছোট দুই বোন তাহমিনা ও তিন্নি স্কুলে পড়ে।
দেশের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ উৎসর্গ করা বীর শহীদদের প্রতি সব সময় একটা আলাদা টান, ভালোবাসা অনুভব করে নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি সানি। বীর শহীদদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সে বলে, ‘তাঁরা নিজেদের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন বলেই আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। পেয়েছি লাল-সবুজের পতাকা। তাঁদের আত্মত্যাগ অবিস্মরণীয়।’
বিএসডি/ এলএল