বর্তমান সময় ডেস্ক-
ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার পুত্র বিএনপির তরুণ নেতা ইশরাক হোসেনের মত বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন বিএনপির ডজনখানেক আলোচিত নেতা। সম্প্রতি ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ সিটি বিএনপির কমিটিতে প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া এবং নায়িকা পরীমণির গ্রেপ্তারে আতঙ্কিত এসব নেতা দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। এসব নেতার মধ্যে রয়েছেন বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সাবেক সভাপতি হাবীব উন নবী খান সোহেল, ঢাকার সাবেক দুই মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন,তাবিথ আউয়ালসহ অনেকে।
জানা গেছে, গত ২ আগস্ট ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখায় আহ্বায়ক কমিটি দিয়েছে বিএনপি। এই কমিটিতে সাবেক সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকদের কাউকে রাখা হয়নি। অনেক যোগ্য এবং ত্যাগী নেতা বাদ পড়েছেন, তাদের অভিযোগ টাকার বিনিময়ে কমিটি দেওয়া হয়েছে। ক্ষুব্ধ এসব নেতা বিএনপি ছেড়ে দিয়ে বিদেশে নিজের ভাগ্য গড়াকেই শ্রেয় মনে করছেন। এদিকে ৪ আগস্ট নায়িকা পরীমণিকে তার বনানীর বাসা থেকে আটক করেছে র্যাব। পরীমণির বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মদ উদ্ধার করেছে র্যাব। এরপর পরীমণিকে ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে উঠে আসে রুপালি পর্দার পেছনের অন্ধকার জগতের গল্প। অল্প সময় অভিনয় করে বিশাল সম্পদের মালিক হওয়ার পেছনের ব্যক্তিদের নাম বলতে থাকলে তদন্ত কর্মকর্তাদের চোখ কপালে ওঠে। তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, পরীমণির সাথে রাত কাটাতেন ঢাকার একাধিক শিল্পপতি এবং রাজনৈতিক নেতা। এই নেতাদের খোঁজ করতেই উঠে আসে একাধিক বিএনপির নেতার নাম। এরপরই আতঙ্কে দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নেন এসব নেতা।
- আরও পড়ুন- কারাগারেই থাকতে হচ্ছে শিল্পার স্বামীকে
বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সাবেক সভাপতি হাবীব উন নবী খান সোহেল বলেন, ঢাকায় কোথাও আন্দোলন না থাকলেও আমরা দক্ষিণ সিটিতে অনেক কষ্টে রাজপথে ছিলাম। জেলে গেলাম, গুলি খেলাম– কিন্তু সেসবের কোন মূল্যায়ন নেই। তাহলে আর রাজনীতি করে কি হবে? বিদেশে গিয়ে নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সোহেল বলেন, ইশরাক সাবেক মেয়র প্রার্থী, জনপ্রিয় তরুণ নেতা, তাকেও সদস্য করা হয়েছে। মির্জা আব্বাসের টাকার কাছে আমাদের নেতারা বিক্রি হয়ে গেছেন। এই নেতাদের আন্ডারে রাজনীতি করা যায় না। সোহেলের মত ঢাকা উত্তর বিএনপির অনেক নেতাও দেশ ছাড়ার প্রস্ততি নিয়েছেন।
সূত্র জানায়, পরীমণির আটকের পর বিএনপির যেসব নেতার সাথে তার সম্পৃক্ততার কথা উঠে এসেছে তারা হলেন তাবিথ আউয়াল, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, প্রচার সম্পাদক: শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি,আন্তর্জাতিক সম্পাদক এহসানুল হক মিলন, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। বিএনপির কেন্দ্রীয় এই নেতারা নিয়মিত পরীমণির বাসায় মদের আড্ডায় যোগ দিতেন। এছাড়া বিভিন্ন নাইট ক্লাবে পরীমণির সাথে একান্তে সময় কাটাতেন। এদের ছত্রছায়ায় পরীমণি আরও কিছু মডেল নিয়ে অনৈতিক ব্যবসা পরিচালনা করতেন। জিজ্ঞাসাবাদে এসব নেতার নাম উঠে আসায় নিজেদের বাঁচাতে দেশ ছেড়ে যাওয়ার সকল প্রস্তুতি নিয়েছেন এসব নেতা। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দেশ থেকে বিএনপির এসব নেতা পালাবেন বলে নিশ্চিত করেছে বিএনপির বিশ্বস্ত সূত্র।
বিএসডি/এমএম