আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আফগানিস্তানের পূর্ব পাকতিকা প্রদেশে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় নিহত বেড়ে ৪৬ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগই শিশু ও নারী। এই হামলার ঘটনায় প্রতিবেশী দেশটির বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী তালেবান।
আফগানিস্তানের চারটি স্থানে পাকিস্তানি বিমান থেকে বোমা হামলা চালানো হয়েছে বলে বুধবার তালেবানের মুখপাত্র হামদুল্লাহ ফিৎরাত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, হামলায় আফগানিস্তানে আহত হয়েছেন আরও ছয়জন।
তবে এই হামলার বিষয়ে পাকিস্তানের সরকার এবং সামরিক কর্মকর্তাদের মন্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। আফগানিস্তানের জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এনায়েতুল্লাহ খোওয়ারাজমি বলেন, ‘‘আফগানিস্তান এই নৃশংস হামলার ঘটনাকে সমস্ত আন্তর্জাতিক নীতির স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং পরিষ্কার আগ্রাসন বলে মনে করে… ইসলামি আমিরাত আফগানিস্তান এই কাপুরুষোচিত হামলার জবাব দেবে।’’
প্রতিবেশী এই দুই দেশের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে। আফগানিস্তানের ভূখণ্ড ব্যবহার করে জঙ্গিরা পাকিস্তানে হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করছে ইসলামাবাদ। তবে আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী তালেবান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
পাকিস্তান-আফগানিস্তানের সম্পর্ক জটিল আকার ধারণ করে চলতি বছরের মার্চে। ওই সময় পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী আফগানিস্তানের ভূখণ্ডে দুই দফায় বিমান হামলা চালায়। এতে আফগানিস্তানে পাঁচ নারী ও শিশু নিহত হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাকিস্তানের জ্যেষ্ঠ এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, আফগানিস্তানের ভেতরে সন্ত্রাসীদের বিভিন্ন আস্তানা লক্ষ্য করে বিমান ও ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। আফগানিস্তানের বারমালের বাসিন্দা মালেল এএফপিকে বলেছেন, মঙ্গলবারের হামলায় এক পরিবারের ১৮ সদস্য নিহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘‘পাকিস্তানি বিমান থেকে দুই থেকে তিনটি বাড়িতে বোমাবর্ষণ করা হয়েছে। এতে কেবল একটি বাড়িতে ১৮ জন নিহত হয়েছেন। হামলায় ওই বাড়ির পুরো পরিবারের প্রাণহানি ঘটেছে।’’
এছাড়া অন্য একটি বাড়িতে হামলায় তিনজন নিহত ও আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন মালেল। তিনি বলেন, পাকিস্তানি হামলায় আহতদের উদ্ধারের পর নিকটবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তালেবান কর্মকর্তারা বলেছেন, নিহতরা স্থানীয় বাসিন্দা এবং ওয়াজিরিস্তান থেকে পাকিস্তান সীমান্তে পালিয়ে এসেছিলেন।
সূত্র: রয়টার্স, এএফপি।