আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
রোববার মধ্যরাত থেকে বৃষ্টি হচ্ছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। নিম্নচাপের পূর্বাভাস থাকলেও রীতিমতো দুর্যোগ নেমে এসেছে রাজ্যটিতে। জেলায় জেলায় চলছে ভারী বৃষ্টিপাত। সঙ্গে বজ্রপাতও। সোমবার দিনভর বৃষ্টিতে পানিতে কার্যত ভেসে গেছে কলকাতা। এর মধ্যেই খারাপ খবর শোনাচ্ছে আবহাওয়া অফিস।
সেখান থেকে জানানো হয়েছে, সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কমে এলেও মঙ্গলবার ফের বৃষ্টি বাড়বে শহরে। পাশাপাশি, রাজ্যের আরও বেশ কিছু জেলায় বৃষ্টির পানির কারণে নতুন করে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতে পারে।
পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়াবিদ ড. সুজীব কর জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে ফের বৃষ্টি বাড়বে কলকাতায়। একটানা এই বৃষ্টি চলতে পারে রাত ১০টা পর্যন্ত। অর্থাৎ আট থেকে দশ ঘণ্টার মধ্যে ফের পানিতে ভাসবে কলকাতা শহর।
ইতোমধ্যেই কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণ সর্বত্র জমে থাকা পানিতে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বৃষ্টি বাড়লে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। টানা বৃষ্টিতে রেকর্ড হারে কমেছে তাপমাত্রা। মঙ্গলবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ২৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে সাত ডিগ্রি কম। পাশাপাশি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকবে ২৪.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে দুই ডিগ্রি কম। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ থাকবে সর্বাধিক ৯৮ শতাংশ।
কলকাতার পাশাপাশি হাওড়া, হুগলি, নদীয়া এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। পুরুলিয়া, বীরভূম ও বাঁকুড়ায় অতিভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও এই তালিকায় রয়েছে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, বর্ধমান এবং মুর্শিদাবাদও। আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানানো হয়েছে, বুধবার পর্যন্ত রাজ্যের বেশ কিছু জেলায় ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে।
এদিকে রোববার রাত থেকে প্রবলবৃষ্টিতে পশ্চিমঙ্গের কলকাতাসহ দক্ষিণের একাধিক জেলা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট জোড়া নিম্নচাপের কারণেই এই বৃষ্টি। নিম্নচাপের সঙ্গে মৌসুমী অক্ষরেখার প্রভাবে আরও বৃষ্টিপাত হতে পারে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজ বলছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর তৈরি হয়েছে নিম্নচাপ। মিয়ানমার সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে এর অবস্থান। ফলে বৃষ্টির দাপট বাড়ছে।
কলকাতার টালিগঞ্জ সার্কুলার রোড, তারাতলা, ভবানীপুর, মিন্টো পার্ক, ক্যামাক স্ট্রিট সর্বত্রই পানির নিচে। ঠনঠনিয়া, ক্য়ামাক স্ট্রিট, মিন্টো পার্ক, কলেজ স্ট্রিট, সেক্টর ফাইভ, চিনার পার্ক, কাঁকুড়গাছি, কৈখালি এলাকাও জলমগ্ন।
সোমবার কার্যত সারা দিনই পাম্প চালিয়ে পানি নিষ্কাষণ করা হয়েছে। তবে যে সকল এলাকায় পাম্প চালিয়ে পানি বের করার চেষ্টা চলছিল, রাত থেকে বৃষ্টির কারণে সেই কাজও বন্ধ রাখা হয়েছে। ভারী বৃষ্টিতে পাম্প চালানো সম্ভব হচ্ছে না বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে, গঙ্গায় পানির স্তর বাড়তে শুরু করেছে। শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পানি কীভাবে গঙ্গা দিয়ে বের করা হবে, তা নিয়ে রীতিমতো সংশয়ে কলকাতা প্রশাসন।