অনলাইন ডেস্ক
নেত্রকোনার শিরিন আক্তারের একটি স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। তিনি একটি কাজ পেয়েছেন ইতালিতে। তার জীবন এখন বদলে যাবে। ইতালি গিয়ে পরিবার ও দেশের অর্থনীতিতে তিনি অবদান রাখতে পারবেন। কিন্তু তার এই আনন্দ পাসপোর্ট অফিসে ঘুরতে ঘুরতে ফিকে হতে সময় লাগল না।
তিনি বলেন, আমার অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেটের সঙ্গে পাসপোর্টের নামের কিছুটা অমিল আছে। ইতালি গিয়ে কাজ করতে হলে পাসপোর্টের এই ভুল সংশোধন করতে হবে। কিন্তু বারবার আবেদন করেও পাসপোর্টের এই সামান্য ভুল সংশোধন করতে পারছি না।
শিরিন আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, পাসপোর্ট সংশোধনের জন্য জন্ম-নিবন্ধন, অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট, এনআইডিসহ যা যা প্রয়োজন সব ডকুমেন্টস দিয়েছি। তবু হচ্ছে না। এই সামান্য কাজটির জন্য আমাকে আর কত ভুগতে হবে? পাসপোর্টের ছোট্ট এই ভুলে আমাকে হয়ত অনেক বড় খেসারত দিতে হবে।
রোববার (৩ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পাসপোর্টের প্রধান কার্যালয়ের সামনে এসব কথা বলেন শিরিন আক্তার। এদিন এখানে মানববন্ধন করেছেন পাসপোর্টসেবা নিতে আসা ভুক্তভোগীরা। জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে মিল রেখে পাসপোর্ট সংশোধনের সুযোগের দাবিতে ‘আমরাই বাংলাদেশ’ ব্যানারে এ মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।
ভুক্তভোগীরা জানান, গত কয়েকবছর ধরে পাসপোর্ট সংশোধনের প্রচেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন তারা। এতে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। জাতীয় পরিচয়পত্র, অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের তথ্যের সাথে মিল রেখে পাসপোর্ট সংশোধনের সুযোগ চান তারা।
পাসপোর্ট সংশোধনের জন্য নোয়াখালীর হাতিয়া থেকে এসেছেন মো. আমীর হোসেন নামের এক তরুণ। তিনি বলেন, আমার এনআইডি ও সার্টিফিকেটে জন্ম সাল ১৯৯৯ আর পাসপোর্টে ১৯৯৩। বিশেষ কারণে নোয়াখালী থেকে এখানে এটা সংশোধনের জন্য এসেছি। কিন্তু এখানকার স্যার আমাকে বলেছে, তোমাকে নোয়াখালী যেতে হবে। আমার আর কোনো কথা না শুনে রুম থেকে বের করে দিয়েছে।
মাহমুদ শরিফ নামের এক ভুক্তভোগী ঢাকা পোস্টকে বলেন, পাসপোর্ট সংশোধনের চেষ্টা করতে করতে আমরা হাঁপিয়ে উঠেছি, আমাদের বাঁচতে দিন। এনআইডির ভিত্তিতে আমরা পাসপোর্ট সংশোধন চাই। তবে সংশোধনের জন্য প্রয়োজন হলে জাতীয় পরিচয়পত্র, স্কুল সার্টিফিকেট, জন্ম-নিবন্ধন সনদ দিতেও সমস্যা নেই।
তিনি বলেন, আমার পাসপোর্ট সংশোধনের আবেদন করেছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষের কোনো সাড়া নেই। তারা বলছে সংশোধন করা যাবে না।কেন যাবে না সেই ব্যাখ্যাও পাচ্ছি না। পাসপোর্ট সেবা নিতে এসে আমরা প্রবাসীরা প্রায়ই নানা সমস্যায় পড়ি। এই সেক্টরে এত ভোগান্তি কেন বুঝি না। সব কিছু সহজ করা উচিত।
বিএসডি/এমএম