ক্রীড়া ডেস্ক,
অস্ট্রেলিয়াকে ৪-১ সিরিজ হারিয়ে দারুণ আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ দল। এবার দেশের মাটিতে চ্যালেঞ্জ নিউজিল্যান্ড। সিরিজ জিতলেই দীর্ঘদিন পর টাইগারদের টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে অবস্থান বদলের সুযোগ। অন্যদিকে ব্লাকক্যাপসরাও দ্বিতীয় সারির দল পাঠিয়ে স্বাগতিকদের রাস্তা সহজ করে দিয়েছে। তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে লড়াই কি এত সহজ হবে! কারণ একটাই অজানা প্রতিপক্ষের বিপক্ষে লড়াই সহজ নয়। তবে ঘরের মাঠ ও উইকেটই টাইগারদের বড় অস্ত্র। এই কন্ডিশনে অস্ট্রেলিয়ার মতো দল ব্যাট হাতে হিমশিম খেয়েছে। সেখানে অনভিজ্ঞ কিউইদের আরও বড় চ্যালেঞ্জ।
সবদিক বিবেচনা করলে বাংলাদেশকে এগিয়েই রাখতে হবে। এরপরও টাইগারদের নয়া ব্যাটিং কোচ অ্যাশওয়েল প্রিন্সকে ভাবাচ্ছে ঘরের মাঠের কন্ডিশন আর উইকেট। কারণ অজিদের বিপক্ষে দল জিতলেও ব্যাটিং ছিল একেবারে নড়বড়ে। আর সেই শিক্ষাই কাজে লাগতে চান নয়া কোচ। বাংলাদেশের মাটিতে তার প্রথম চ্যালেঞ্জ নিয়ে তিনি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া সিরিজের শিক্ষা কাজে লাগাতে হবে। গতকাল ছেলেদের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। লিটন দাস, মুশফিকুর রহীম অস্ট্রেলিয়া সিরিজে খেলেনি, তাদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে নেওয়া হচ্ছে। যদিও এই কন্ডিশনে তারা অনেক অভিজ্ঞ। অস্ট্রেলিয়া সিরিজের কোন কোন জায়গায় নিউজিল্যান্ড সিরিজে উন্নতি করতে হবে এসব নিয়ে কথা হচ্ছে।’
এছাড়াও মাঠের লড়াইয়ে নামার আগে প্রতিপক্ষকে সক্ষমতার বিষয়ে শিষ্যদের সতর্কও করেছেন নয়া ব্যাটিং কোচ প্রিন্স। বিশেষ করে নিউজিল্যান্ডের রণপরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘নিউজিল্যান্ড আমাদের নিয়ে ভালো বিশ্লেষণ করবে। অস্ট্রেলিয়া সিরিজ দেখে ভালো পরিকল্পনা সাজাতে পারবে। নিউজিল্যান্ড এমন এক দল যারা আলাদা আলাদা ব্যাটসম্যান, বোলার নিয়ে পরিকল্পনা করে, আলাদা পিচ ও কন্ডিশন নিয়ে কাজ করে। প্রত্যেক তথ্য তারা কাজে লাগায়। এক্ষেত্রে নিউজিল্যান্ড অনেক স্মার্ট দল।’ দক্ষিণ আফ্রিকার এই কোচের বাংলাদেশের সঙ্গে অবশ্য এটি প্রথম কাজ নয়। এর আগে তিনি শিষ্যদের সঙ্গে প্রথম কাজ করেছেন জিম্বাবুয়ে সফরে। সেখানে দারুণ ব্যাটিং করে টাইগাররা। টেস্ট, ওয়ানডে ও সবশেষ ২-১ টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতে নেয়। তবে শেষ দুই সিরিজের সঙ্গে তুলনা করে প্রিন্স বলেন, ‘জিম্বাবুয়ে ও অস্ট্রেলিয়া সিরিজের মূল পার্থক্য কন্ডিশনে, ব্যাটিং কন্ডিশনে। ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। জিম্বাবুয়ে কিছুটা বাউন্স ছিল। সেখানে সিরিজ জিতে বাংলাদেশে এসে লো বাউন্সের উইকেটে খেলতে হয়েছে। কন্ডিশনের সঙ্গে কীভাবে ছেলেরা মানিয়ে নিচ্ছে এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। নিউজিল্যান্ড সিরিজে হয়তো অনেকটা একই উইকেট থাকবে।’
সবশেষ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে টাইগারদের ওপেনিংয়ে ব্যর্থতা ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রথম চার ম্যাচে দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও নাঈম শেখ সব মিলিয়ে করেছেন ৫১ রান। তবে শেষ ম্যাচে নাঈমের সঙ্গে ওপেন করতে নেমে সর্বোচ্চ ৪১ রানের জুটি গড়েন দু’জন। তাই এবারও ওপেনিংটাই বড় চিন্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে। যদিও প্রিন্স একটি সিরিজে ব্যর্থতা দিয়ে ওপেনিংকে বিবেচনা করতে চান না। আর তার হাতে এবার বিকল্প ওপেনার হিসেবে আছেন দলে ফেরা লিটন দাসও। তিনি বলেন, ‘ওপেনারদের নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে আমার উদ্বেগ নেই। জিম্বাবুয়েতে ২-১টি ভালো পার্টনারশিপ হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া সিরিজে কন্ডিশন ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিন ছিল। এমন উইকেটে অনেক বেশি বাউন্ডারি হাঁকানো মুখের কথা নয়। ওপেনিং পজিশন নিয়ে ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। লিটনের মতো ওপেনার দলে ফিরেছে। দলের জন্য এমন প্রতিযোগিতা খুব ভালো।’
অন্যদিকে এবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পূর্ণশক্তির বাংলাদেশ দল নিয়ে মাঠে নামার সুযোগ। কারণ অস্ট্রেলিয়া সিরিজে খেলতে না পারা দেশের সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীমও ফিরেছেন দলে। এ বিষয়ে কোচ বলেন, ‘লিটন ও মুশফিক ফেরায় দলের জন্য ভালো হলো। অভিজ্ঞ ও তরুণদের নিয়ে দলের কম্বিনেশনটা এখন দারুণ। শুধু ব্যাটিং নয়, বোলিং বিভাগেও। পেস বিভাগে তরুণ কয়েকজন এসেছে, অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার আছে। প্রত্যেক বিভাগে মানসম্পন্ন ক্রিকেটার আছে। দল এখন লিটন ও মুশফিকের অভিজ্ঞতা পাবে। অভিজ্ঞদের কাছ থেকে তরুণদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেয়া জরুরি। ফাস্ট বোলিং, স্পিন বোলিং, ব্যাটিং- সব বিভাগেই মানসম্পন্ন ক্রিকেটার আছে।’ ১লা সেপ্টেম্বর থেকে মাঠে গড়াবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। ঘরের মাঠ- সবগুলো ম্যাচ জিততে পারলে বাংলাদেশ দল আইসিসি’র টি- টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে ১০ থেকে এক লাফে পঞ্চম স্থানে উঠে আসবে।
বিএসডি/এএ