জেলা প্রতিনিধি:
গ্লাডিস নাইলি টরিবিও মরালেস (৩২) নামে মেক্সিকার এক তরুণীর সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় বাংলাদেশি যুবক রবিউল হাসান রুমানের (২৯)। সেই থেকে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক।
মেয়েটি এখন জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের পোগলদিঘা গ্রামের মো. নজরুল ইসলামের বাড়িতে অবস্থান করছেন।
সোমবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, মেক্সিকান তরুণীকে একনজর দেখার জন্য বাড়িটিতে উপচেপড়া ভিড়।
গ্লাডিস নাইলি টরিবিও মরালেসের বর্তমান নাম মোছা. লাইলী আক্তার। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে রবিউল হাসান রুমানকে বিয়ে করে হাসি-আনন্দে সময় কাটাচ্ছেন তিনি।
রবিউল হাসান পোগলদিঘা গ্রামের মো. নজরুল ইসলামের ছেলে। তিনি ময়মনসিংহের রুমডো ইনস্টিটিউট অব মডার্ন টেকনোলজি থেকে মেকানিক্যালে ডিপ্লোমা করে ফ্রিল্যান্সিংয়ে জড়িত।
রবিউল হাসান জানান, তিনি ভালোভাবে ইংরেজিতে কথপোকথনের জন্য একজন দক্ষ বন্ধু খুঁজছিলেন। একপর্যায়ে ২০১৯ সালে উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোর তরুণী গ্লাডিস নাইলি টরিবিও মরালেসের সঙ্গে তার ফেসবুকে পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব ও প্রেম হয়। টানা দুই বছর প্রেম করার পর রোববার (২১ নভেম্বর) সকালে বাংলাদেশে আসেন গ্লাডিস নাইলি। রবিউল ও তার পরিবারের লোকজন হযরত শাহ্ জালাল (র.) বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান। প্লেন থেকে নামার পর কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ঢাকা জজ কোর্টে গিয়ে এফিডেভিটের মাধ্যমে নিজের খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে রবিউলকে বিয়ে করেন। এরপর বাড়িতে এসে পৌঁছান মধ্যরাতে।
তরুণীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেক্সিকোর পোএবলা শহরের ব্যবসায়ী গ্রেগ্রোরিও টরিবিওর মেয়ে তিনি। পোএবলা বিশ্ববিদ্যালয় (Benemerita Autonomous University of Puebla, Mexico) থেকে তিনি ২০১৬ সালে গ্র্যাজুয়েশন করেন। রবিউলের সঙ্গে প্রেম হওয়ার পরপরই তিনি বাংলাদেশে আসার সিদ্ধান্ত নেন, কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে দেরি হয়।
তার ভাষায়, বাংলাদেশে আসতে কোনো ভয় বা সমস্যা হয়নি, শুধুমাত্র করোনার জন্য কিছুটা উৎকণ্ঠা থাকলেও ভালোবাসার মানুষের কাছে আসার আনন্দে তাও প্রভাব ফেলেনি।
বাংলাদেশটা দেখতে অনেক সুন্দর এবং এলাকার লোকজন অনেক মিশুক ও ভালো বলে তিনি মন্তব্য করেন।
কিছুদিন শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান করে গ্লাডিস নাইলি মেক্সিকোতে ফিরে যাবেন এবং পরবর্তীতে দুদেশের নিয়মানুযায়ী আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে রবিউলকে মেক্সিকোতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে বলেও জানা গেছে।
পোগলদিঘা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সামস উদ্দিন জানান, প্রেমের টানে মেক্সিকান তরুণী বাংলাদেশে এসেছেন, এতে প্রেমিক যুগলের প্রেমের সার্থকতা হয়েছে। মেক্সিকান তরুণীকে পুত্রবধূ করতে পেরে পরিবারও খুশি।