খেলাধূলা প্রতিনিধি:
নকআউট পর্বের প্রথম দুই রাউন্ডে আসরের সবচেয়ে বড় দুটি অঘটনের জন্ম দেওয়া ভিয়ারিয়াল প্রথম ৪৫ মিনিটে দারুণ প্রতিরোধ গড়ে। তবে লিভারপুলের আক্রমণের মুখে অবশ্য ভেঙে গেল তাদের সব বাধা। দুই মিনিটের ২ গোলে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালের পথে এগিয়ে গেল ইয়ুর্গেন ক্লপের দল।
বুধবার রাতে অ্যানফিল্ডে সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ২-০ গোলে জিতেছেন ছয়বারের ইউরোপ চ্যাম্পিয়নরা। প্রতিপক্ষের আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সাদিও মানে।
শেষ ষোলোয় জুভেন্টাস ও কোয়ার্টার ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখকে বিদায় করে দেওয়া ভিয়ারিয়ালের ওপর শুরু থেকে প্রবল চাপ তৈরি করে লিভারপুল। খেলার দ্বাদশ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগও পেয়ে যান তারা। কিন্তু ডান দিক থেকে মোহামেদ সালাহর ক্রস ডিবক্সে ফাঁকায় পেয়েও হেডে বল লক্ষ্যের ধারেকাছেও রাখতে পারেননি মানে। পরের মিনিটে দূর থেকে জোরালো শট নেন লুইস দিয়াস। তবে সোজাসুজি শট ঠেকাতে তেমন বেগ পেতে হয়নি গোলরক্ষক জেরোনিমো রুলির। ২২তম মিনিটে বক্সের বাইরে এবং দুরূহ কোণ থেকে জর্ডান হেন্ডারসনের নেওয়া শট পোস্টের বাইরের দিকে লাগে।
৩১তম মিনিটে আরেকবার গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে হতাশ করেন দিয়াস। পরের মিনিটে মানের শট প্রতিপক্ষের একজনের পায়ে লেগে পোস্টের বাইরে যায়। খানিক বাদে সালাহর ভলি ক্রসবারের ওপর দিয়ে উড়ে যায়। তার পরও ৪২তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতেন স্বাগিতকরা, কিন্তু থিয়াগো আলকান্তারার অনেক দূর থেকে নেওয়া বুলেট গতির শট পোস্টের ওপরের অংশে বাধা পায়।
দ্বিতীয়ার্ধেও একইভাবে শুরু হওয়া লড়াইয়ের পঞ্চম মিনিটে ভিয়ারিয়ালের বাঁধ ভেঙে পড়ার আভাস মেলে। ফাবিনিয়ো জালে বল পাঠালেও ভার্জিল ফন ডাইক অফসাইডে থাকায় মেলেনি গোল। পরের পাঁচ মিনিটেই দুবার জালে বল পাঠিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় লিভারপুল।
৫৩তম মিনিটে ডান দিক থেকে শট নেন জর্ডান হেন্ডারসন। ঠেকাতে পেরভিস এস্তুপিনানের বাড়িয়ে দেওয়া পায়ে লেগে বল আরও উঁচুতে উঠে গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে জালে জড়ায়। দুই মিনিট পর ডিবক্সের মুখ থেকে ডিফেন্ডার পাও তরেসেরে পায়ের ফাঁক দিয়ে থ্রু পাস বাড়ান সালাহ। আর দারুণ এক টোকায় গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন মানে। মৌসুমে সেনেগালের ফরোয়ার্ডের মোট গোল হলো ২০টি।
৬৪তম মিনিটে ভিয়ারিয়ালের জালে আবারও বল পাঠান অ্যান্ড্রু রবার্টসন। তবে পরিষ্কার অফসাইডে ছিলেন তিনি। পাঁচ মিনিট পর ফন ডাইকের দূর থেকে নেওয়া বুলেট গতির শট সোজাসুজি থাকলেও ঠেকাতে বেগ পেতে হয় রুলির। একেবারে শেষ দিকে গিয়ে লক্ষ্যে প্রথম শট নিতে পারে ভিয়ারিয়াল। তবে বুলে দিয়ার শটটি ঠেকাতে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি পোস্টে চাপমুক্ত সময় কাটানো আলিসনের। ঘরের মাঠে সহজ জয় পেলেও লড়াইটা যখন দুই লেগের, তখন নির্ভার হওয়ার সুযোগ নেই লিভারপুলের। চলতি আসরে ভিয়ারিয়ালের চমক জাগানো পারফরম্যান্সও যথেষ্ট ভীতি জাগানিয়া।
শেষ ষোলোয় ঘরের মাঠে ১-১ ড্রয়ের পর জুভেন্টাসের মাঠে গিয়ে ৩-০ গোলে জিতেছিল ভিয়ারিয়াল। আর কোয়ার্টার-ফাইনালে নিজেদের আঙিনায় ১-০ গোলে জয়ের পর ফিরতি পর্বে বায়ার্নের মাঠে গিয়ে ১-১ ড্র করে বাজিমাত করে তারা। এবার ব্যবধানটা খুব বড় করতে পারেনি লিভারপুল। তাই ভিয়ারিয়ালের আরেকটি চমক এবং অঘটনের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আগামী মঙ্গলবার সেই স্বপ্নেই চেনা মাঠে নামবে উনাই এমেরির দল।
বিএসডি/ এমআর