প্রযুক্তি ডেস্ক:
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, চলতি বছরেই আমরা সীমিত পরিসরে ফাইভ-জি চালু করতে যাচ্ছি। দেশের পাঁচটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিটিসিএল ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক স্থাপনে কাজ করছে। টেলিটক ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক নিয়ে কাজ করছে।
বুধবার ঢাকায় ‘নিরাপদ ইন্টারনেট : চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশের (আইইবি) কম্পিউটার কৌশল বিভাগ এ সেমিনারের আয়োজন করে।
আইইবি সদর দফতরের কাউন্সিল হলে অনুষ্ঠিত সেমিনারে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন মোস্তাফা জব্বার। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, দেশে এখন ১১ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। তাদের মধ্যে খুব সামান্যই প্রযুক্তির সাথে খাপ খাওয়ানোর দক্ষতা রাখে। মাত্র কয়েক বছর আগেও ডিজিটাল নিরাপত্তা বলতে কোনো প্রযুক্তি কিংবা অন্য কোনো কৌশল বা সুনির্দিষ্ট আইন ছিল না।
মন্ত্রী বলেন, ইন্টারনেট নির্ভরতা যত বেশি তৈরি হচ্ছে, ডিজিটাল অপরাধ তত বেশি বাড়ছে। এসব অপরাধ প্রতিরোধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। ডিজিটাল অপরাধ শনাক্ত ও তা দমন করার জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তিই ব্যবহার করতে হবে। প্রচলিত পদ্ধতিতে ডিজিটাল অপরাধ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সম্মিলিত উদ্যোগে কাজ করতে হবে। জনগণের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা নিয়ে ব্যাপক সচেতনতা তৈরির বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সাইবার থ্রেড ডিটেকশন ও রেসপন্স কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এর ফলে ইতোমধ্যে ২২ হাজার পর্নো সাইট ও চার হাজার জুয়ার সাইটসহ আরও সহস্রাধিক আপত্তিকর সাইট বন্ধ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ফেসবুক ও ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ক্ষতিকর কন্টেন্ট পৃথিবীর কোনো দেশই বন্ধ করার প্রযুক্তি আবিষ্কার করতে পারেনি। তবে আমাদের দৃঢ় প্রচেষ্টায় তাদের সঙ্গে সু-সম্পর্ক তৈরি করার ফলে আমরা আজ কিছুটা সুফল পাচ্ছি। তারা এক সময় মত প্রকাশের স্বাধীনতা কিংবা তাদের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ডের দোহাই দিয়ে যেসব বিষয় এড়িয়ে যেতে চাইতো, এখন সেক্ষেত্রে কিছুটা হলেও পরিবর্তন এসেছে। তারা এখন ভ্যাট-ট্যাক্স দিচ্ছে। আমাদের যেকোনো অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। তাদের প্রতিনিধিরা এখন নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে।
ডিজিটাল কানেক্টিভিটি ডিজিটাল বাংলাদেশের ব্যাকবোন (মেরুদণ্ড) উল্লেখ করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশে ১৭ কোটি মোবাইল সিম ব্যবহৃত হচ্ছে। শতকরা ৯৮ ভাগ এলাকা নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে। প্রায় ৮০ ভাগ এলাকা ফোর জি নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে। দেশে ২০০৮ সালে মাত্র ৮ জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ ব্যবহৃত হতো। বর্তমানে তা দুই হাজার ৬৪৯ জিবিপিএসে উন্নীত হয়েছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর পর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -২ উৎক্ষেপণের উদ্যোগ আমরা নিয়েছি। দেশে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগের প্রক্রিয়া চলছে। ভারত ও সৌদি আরবে আমরা ব্যান্ডউইথ রফতানি করছি। ওরা আমাদের কাছ থেকে আরও ব্যান্ডউইথ নেবে। প্রতিবেশি ভূটান ও নেপালেও ব্যান্ডউইথ রফতানির প্রক্রিয়া চলছে
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইইবি কম্পিউটার কৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. তমিজ উদ্দীন আহমেদ। সঞ্চালনায় ছিলেন কম্পিউটার কৌশল বিভাগের সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় কুমার নাথ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন আইইবি’র সাবেক প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর, আইইবি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট (এইচআরডি) ইঞ্জিনিয়ার মো. নূরুজ্জামান ও টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. সাহাব উদ্দিন।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, আইইবি’র সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহাদাৎ হোসেন (শীবলু)। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সিটিটিসি’র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ইঞ্জিনিয়ার সাইদ নাসিরুল্লাহ। ধন্যবাদ জানান আইইবি কম্পিউটার কৌশল বিভাগের ভাইস চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার খান মোহাম্মদ কায়ছার।
বিএসডি/আইপি