নিজস্ব প্রতিবেদক,
অন্যরকম এক আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিদায় জানানো হয়েছে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেনকে। দীর্ঘ দুই বছর কর্মকালীন এ পুলিশ সুপারের সুনামের কোনো কমতি ছিল না।
রোববার (১ আগস্ট) বিকেলে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে প্রথাগতভাবে বিদায় দেয়া হয় বিদায়ী পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেনকে। বিদায়ের আগে এসপি মো. আলমগীর হোসেনকে জেলা পুলিশের ব্যান্ড পার্টিসহ নানান ফুলে সজ্জিত গাড়িতে ফুলের রশি বেঁধে পুলিশ সুপারের বাংলো থেকে জানানো হয় বিদায়।
এদিকে স্বাভাবিকভাবে যে কোনো পুলিশ সুপারের বিদায়ের চেয়ে আলমগীর হোসেনের বিদায়টি ছিল ভিন্ন আয়োজনে।
এসপি মো. আলমগীর হোসেনকে বিদায় দেওয়ার সময় জেলা পুলিশের বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তা, পুলিশ সদস্য এবং সব কর্মচারীর মধ্যে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এসপি মো. আলমগীর হোসেন ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলার সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান। ৬ ভাই আর ৩ বোনের মধ্যে মো. আলমগীর হোসেন সবার বড়। শিক্ষা জীবনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজকল্যাণ বিভাগ থেকে ১৯৯৫ সালে স্নাতক ও ১৯৯৬ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি শেষে ২২তম বিসিএস (তথ্য ক্যাডারে) যোগ দিয়ে ২০০৩ সালে যোগদান করেন। এরপর আবার ২৪ তম বিসিএস (পুলিশ ক্যাডারে) ২০০৫ সালে পুলিশ বিভাগে যোগদান করেন।
এরপর সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের কয়েকটি জেলায় এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে বরিশাল ও কুমিল্লায় দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০১৯ সালের ২১ জুন তিনি পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন।
যখন দুনিয়াজুড়ে রাজত্ব করছে করোনাভাইরাস। সময়ের পরিক্রমায় লাশের মিছিলটাও দীর্ঘ হচ্ছে। সংকটময় পরিস্থিতিতে করোনা আক্রান্ত হয়ে যারা শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভোগেন; তাদের কথা চিন্তা করে ২০২০ সালের ২৮ জুন কোভিড অক্সিজেন ব্যাংক চালু করার পর ব্যাপক আলোচনায় এসেছেন পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন। সেই অক্সিজেন ব্যাংক থেকে নোয়াখালী জেলা ছাড়াও ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লা জেলার করোনা রোগী সেবা নিয়েছেন।
বেগমগঞ্জ থানা এলাকায় একজন নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরালের ঘটনায় মামলা ও আসামিদের গ্রেফতার করে আইনামলে আনা এবং সুবর্ণচরের চরজব্বর থানা এলাকায় সন্তান তার জন্মদাতা মাকে হত্যা করে ৫ টুকরো করে ছড়িয়ে রাখে, পরবর্তীতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা ভিকটিমের আপন ছেলে হুমায়ুন কবিরকে গ্রেফতার করে আইনামলে আনার ফলে সারা বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফিরে আসে এবং পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়।
এছাড়া অস্ত্র, মাদক, চোরাচালান, চোর, ডাকাত, ছিনতাই, সমাজে একশ্রেণির ধোকাবাজ, চাদাবাজ এবং নারী নির্যাতন বন্ধে কঠোর অবস্থানে ছিলেন তিনি। যার ফলে নোয়াখালীর সাধারণ মানুষের কাছে একজন ভালো পুলিশ অফিসার এসপি মো. আলমগীর হোসেন।
বিএসডি/এমএম