ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের সীমান্ত থাকায় নিরাপত্তায় বাড়তি গুরুত্ব রয়েছে এ রাজ্যের। পাশাপাশি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একমাত্র ‘গেটওয়ে’ এই পশ্চিমবঙ্গ। স্বাভাবিকভাবেই প্রতিবেশী তিন দেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যর বিষয়টি অনেকংশে নির্ভর করছে পশ্চিমবঙ্গের ওপর। ফলে নিরাপত্তা ও বাণিজ্য- দুটি ক্ষেত্রেই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের অবস্থান কেন্দ্রের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এসব বিষয় মাথায় রেখেই প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে শুক্রবার বৈঠক করতে পশ্চিমবঙ্গে যান দেশটির স্বরাষ্ট্র সচিব। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, পশ্চিমবঙ্গে সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) নজরদারির জন্য আউটপোস্ট তৈরির জমি চিহ্নিত করেছে। স্থানীয়ভাবে জেলা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এই কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সহমত হয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গের ১০টি জেলা মিলে আন্তর্জাতিক সীমান্তের দৈর্ঘ্য অন্তত এক হাজার ১৬৪ কিলোমিটার, যার মধ্যে অনেকটাই কাঁটাতারের বেড়ায় সুরক্ষিত। আরও ২৮৯ কিলোমিটার কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হবে। এর মধ্যে প্রায় ১৮২ কিলোমিটারের কাজ দ্রুত সেরে ফেলতে পরিকল্পনাও চূড়ান্ত।
কর্মকর্তারা আশাবাদী, কোনো এলাকা অরক্ষিত না থাকলে সীমান্তে অনুপ্রবেশ বা সীমান্তবর্তী জেলাগুলোয় অপরাধ কমানো সম্ভব হবে, রোখা যাবে চোরাচালানও। সীমান্তে তাই বাড়তি নজরদারি ও সতর্কতার দাবিও জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
এছাড়াও বৈঠকে রাজ্যের সীমান্ত বরাবর সাতটি নতুন ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট তৈরি করতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। তার জন্য জমি অধিগ্রহণ ও ‘ডিটেলড ইঞ্জনিয়ারিং রিপোর্ট (ডিইআর)—এ নীতিগত ছাড়পত্র ইতোমধ্যে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবার ‘ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি’ জমি চিহ্নিত করবে। কাজটা হবে রাজ্য সরকারের সহযোগিতায়।
বৈঠকে স্থলবন্দরগুলোর আধুনিকীকরণ নিয়ে আলোচনা হয়। ভারত-নেপাল সীমান্তে পানিট্যাঙ্কি, ভারত-ভুটান সীমান্তে জয়গাঁও ছাড়াও ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে চ্যাংড়াবান্ধা, পেট্রাপোল, মাহদীপুরের আধুনিকীকরণ দ্রুত শেষ করা হবে। বিমানবন্দর বা সমুদ্রবন্দরে অভিবাসন, শুল্ক ও প্রয়োজনীয় দফতরগুলোর মতো এসব সুবিধা স্থলবন্দরগুলোতেও থাকবে। বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান থেকে পশ্চিমবঙ্গ হয়ে ভারতের অন্যান্য প্রান্তে যাওয়ার জন্য যাবতীয় অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে।