নিজস্ব প্রতিবেদক,
দেশের একমাত্র চতুদেশীয় স্থলবন্দর বাংলাবান্ধায় গত অর্থ বছরে বেড়েছে রাজস্ব আদায়। করোনাসহ নানান সংকটের মাঝেই রাজস্ব আদায় বেড়েছে। এ স্থলবন্দর দিয়ে পাট ও পাটজাত পণ্য, আলু, ব্যাটারি, কোমল পানীয়, গার্মেন্টস সামগ্রী, ক্যাপ, হ্যাঙ্গার, সাবান, বিস্কুট, চানাচুর, জুস, কাচ, মোটরসাইকেল, পাথর, মেশিনারিজ, ডাল, চাল, ভুট্টা, প্লাস্টিক দানা, আদাসহ বিভিন্ন পণ্য রফতানি হচ্ছে।
স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। রাজস্ব আদায় হয় ৬১ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এর আগে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৩১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলে আদায় করা হয় ২১ কোটি ৬৪ লাখ তিন হাজার টাকা। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে নির্ধারণ করা হয় ৩৬ কোটি ৭৯ লাখ ৬৯ হাজার ৮১১ টাকা, আদায় হয় ২৫ কোটি ৭৩ হাজার টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা ২০ কোটি টাকা, আদায় হয় ১৮ কোটি ৭৮ লাখ ২৩ হাজার টাকা। ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩৬ কোটি টাকা, আদায় হয় ১৮ কোটি টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয় ৬০ কোটি টাকা। আদায় করা হয় ৩৫ কোটি ৪০ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ২২ কোটি ৩৬ লাখ ৬ হাজার নির্ধারণ হলেও আদায় হয় ২৬ কোটি ৯৩ লাখ ৫৯ হাজার ২৩৯ টাকা। ২০১২-১৩ অর্থ বছরে নয় কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা থাকলেও আদায় হয়েছিল ১৩ কোটি টাকা। এই অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছিল। ২০১১-১২ সালে ছয় কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এক কোটি টাকা বেশি আদায় হয়েছিল।
বাংলাবান্ধা সিঅ্যান্ডএফ এসোসিয়েশনের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম দৈনিক অধিকারকে জানান, মহামারী করোনার কারণে উচ্চ শুল্কহারের পণ্য আমদানি কমে গেছে। চাহিদা অনুপাতে বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন হলে দ্বিগুণ পরিমাণ রাজস্ব আদায় সম্ভব।
বাংলাবান্ধা আমদানি-রফতানি কারক গ্রুপের সভাপতি আব্দুল লতিফ তারিন ও সাধারণ সম্পাদক কুদরত-ই-খুদা মিলন দৈনিক অধিকারকে জানান, দেশের একমাত্র সম্ভাবনাময় চার দেশিয় স্থলবন্দর বাংলাবান্ধা। এ বন্দরের তিন দেশের সঙ্গে ভৌগলিক অবস্থান কাছাকাছি হওয়ার কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটন শিল্পের তৈরি হওয়ায় প্রতি অর্থ বছরে প্রচুর পরিমাণে রাজস্ব আদায় হয়। এবং এই মহামারী করোনার মধ্যেও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে দ্বিগুণ রাজস্ব আয় হয়েছে। করোনার প্রকোপ কমে গেলে এই বন্দরটি থেকে রাজস্ব আদায় জাতীয় রাজস্ব খাতে বিশেষ অবদান রাখবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের সহকারী কমিশনার মবিন উল ইসলাম দৈনিক অধিকারকে জানান, করোনাকালীন সময়ে স্থলবন্দরে সকল স্তরের কর্মকর্তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। কর্মকর্তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও এখানকার ব্যবসায়ীদের সহযোগিতার কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ রাজস্ব আদায় সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ভৌগলিক অবস্থানগত কারণেই এ স্থলবন্দরটি অপার সম্ভাবনাময়। ভবিষ্যতে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য কার্যক্রম শুরু হলে দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর হিসেবে স্থান পাবে এবং জাতীয় রাজস্ব আয়ে যোগ হবে নতুন মাত্রা।
বিএসডি/আইপি