বাগচালা গ্রামের সন্তান এভারেস্ট জয় করায় এলাকাবাসী খুশি

নিজস্ব প্রতিবেদক 

সপ্তম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয় করেছেন গাজীপুরের কালিয়াকৈরের কৃষক পরিবারের সন্তান ইকরামুল হক শাকিল। তার এ জয়ে শুধু পরিবারই খুশিই নন এলাকাবাসী তাকে নিয়ে গর্ববোধ করছেন তার এলাকার সাধারণ মানুষ ও প্রতিবেশীরা।

সোমবার (১৯ মে) বিকেলে শাকিলের এভারেস্ট জয়ের খবর এলাকায় পৌঁছলে তার বাড়িতে ভিড় করে প্রতিবেশী, স্বজন ও দুর দূরান্ত থেকে আসা সাধারণ মানুষ। এসময় তাদের বেশ উচ্ছসিত দেখা যায়। শাকিলের মা তাদের সাথে অশ্রুসিক্ত চোখে শাকিলের নানা স্মৃতিচারণ করছেন।

৩৫ বছর বয়সী শাকিলের জন্ম গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের বাগচালা গ্রামে। এ গ্রামেই তার বেড়ে উঠা। শাকিলের বাবা কৃষক খবির উদ্দিন, মা গৃহিণী শিরিনা বেগম, দুই ভাই সজিব আহমেদ ও সাকিব আহমেদকে নিয়ে তাদের সংসার।

২০১৯ সালে বাবার মৃত্যুর পর পরিবারের হাল ধরেন তার মা। বাবার রেখে যাওয়া কয়েক বিঘা জমি চাষ করে তার ভাই সজিব আহমেদ। আরেক ভাই সাকিব স্থানীয় একটি কারখানার শ্রমিক। বাড়ির তিন কোণে তিনটি বসত ঘর। উত্তরের ভিটার ঘরটি জীর্ণ ও দক্ষিণের ভিটার ঘরটিতে গবাদিপশু রাখেন, পূর্ব পাশের ঘরটিতে শাকিলের পরিবার বসবাস করেন। শাকিল স্থানীয় ৭নং বাগচালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা ও জনতা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন, এরপর তিনি পিয়ার আলী কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ছোট বয়স থেকেই লেখালিখি, বই পড়া, ভ্রমণে বেশ আকৃষ্ট ছিল শাকিল। এখন পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ ও ভ্রমণ বিষয়ক ৬টি বই লিখেছেন।

প্রতিবেশী আব্দুর রাজ্জাক জানান, শাকিলকে এই ভাঙ্গা ঘর থেকে এতো উপরে নিয়ে যাবে এটা আমরা কল্পনাও করতে পারি নাই। শাকিলের উছিলাতে আজকে আমাদের গ্রামকে সারা দেশের মানুষের মতো সারা বিশ্বের মানুষ চিনেছে।

অপর প্রতিবেশী জানান, শাকিল ছোট বেলা থেকে বেশ মেধাবী। আমরা তাকে সবসময়ই আদর স্নেহ করতাম। আমরা দুপুরের পরপরই শাকিলের সফলতার খবরটি পেয়েছি। আমাদের বাগচালা গ্রামের সন্তান এভারেস্ট জয় করেছে এতে আমরা খুব আনন্দিত গর্বিত। বিশ্বে সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টে বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকায় উঠিয়েছেন আমাদের গ্রামের বাসিন্দা শাকিল। এতে আমরা গর্বিত উচ্ছসিত।

শাকিলের মা শিরিনা আক্তার জানান, গত শুক্রবার রাতে শাকিলের সাথে তার সবশেষ কথা হয়। এরপর থেকে তিনি বেশ চিন্তিত ছিলেন। সন্তানের চিন্তায় গত তিনদিন তার খাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সন্তানের সফলতার জন্য সন্তানকে সুস্থ ভাবে ফিরিয়ে আনতে আল্লাহ্ কাছে দোয়া করেছেন। শাকিলের সফলতার খবর শুনে তিনি অশ্রুসিক্ত হয়ে পরেন।

কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহমেদ বলেন, আমি স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীর মাধ্যমে এভারেস্টের বিষয়টি জেনেছি। শাকিলের এমন অর্জনে আমরা গর্বিত। আমরা বিভিন্নভাবে খোঁজ নিচ্ছি।