নিজস্ব প্রতিবেদক:
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে সুদের পাওনা টাকা না দেওয়ায় জিমি আক্তার (৩০) নামে এক নারীকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় তার স্বামী নুর আলম আহত অবস্থায় ফরিদপুর মেডিক্যালে ভর্তি রয়েছেন। হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল রবিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার পাইকদিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত নুর আলমের ছোট ভাই হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে আজ সোমবার সকালে ২৫ জনকে আসামি করে মুকসুদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।মামলার বাদী সূত্রে জানা গেছে, পাইকদিয়া গ্রামের হালিম মোল্যার ছেলে অসিম মোল্যার কাছ থেকে সুদ দেওয়ার শর্তে দুই লাখ টাকা ছয় মাসের জন্য ঋণ করেন নুর আলম। সুদবাবদ অসিমকে ৫০ মণ ধান দেওয়ার কথা ছিল। আরো ২ লাখ টাকার জামানত হিসেবে জিমি বেগমের ব্যাংক হিসাবের চারটি চেক জমা রাখেন অসিম। কিন্তু এ বছর বর্ষায় ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে পানিতে ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় নুর আলম প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেননি। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার নুর আলমকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছিলেন ঋণদাতারা। এ নিয়ে একটি সালিশও বসে। তাতে আগামী ৩০ কার্তিক (১৫ নভেম্বর) ঋণের টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলে মীমাংসা হয়।
নুর আলমের ছোট ভাই হাবিবুর রহমান বলেন, কিন্তু গতকাল রবিবার রাতে অসিম মোল্যা আমার ভাইকে বলেন, আমাদের সঙ্গে তার চুক্তি হয়েছে তা অসিমের অন্য ভাইদের সামনে গিয়ে আবার বলতে হবে। এই বলে ডেকে নিয়ে যান তিনি। সেখানে টাকা না দেওয়ার বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে পাওনাদার অসিম মোল্যার ভাই ফারুক মোল্যা নুর আলমকে মারধর শুরু করেন। এসময় তার স্ত্রী ঠেকাতে গেলে স্ত্রীকেও মারধর করা হয়। একপর্যায়ে তারা ধারাল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দুজনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারত্মক আহত করেন ৷ পরে তাদের আহত অবস্থায় মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে জিমি বেগম চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার স্বামী নুর আলমের অবস্থার অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ ব্যাপারে মুকসুদপুর থানার ওসি মো. আবু বকর মিয়া জানান, পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে জিমি বেগম নামের এক নারী খুন হয়েছেন। তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। তার স্বামী ফরিদপুর মেডিক্যালে আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। পুলিশ ইতোমধ্যে আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের আদালতে পাঠানো হবে। বাকিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বিএসডি/ফয়সাল