আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী তালেবানের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আরও ২০টি দেশ। দেশটির সাবেক নিরাপত্তা বাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর সদস্য এবং সাবেক সরকারের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বেছে বেছে হত্যার অভিযোগে এই নিন্দা জানিয়েছে দেশগুলো।
একইসঙ্গে এই ধরনের পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতেও তালেবানের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। রোববার (৫ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিবি এবং কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
এর আগে গত নভেম্বর মাসের শেষের দিকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) নতুন এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত আগস্ট মাসে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সাবেক শতাধিক সৈন্য তালেবানের হাতে নিহত অথবা নিখোঁজ হয়েছেন।
সংস্থাটি সেসময় জানায়, ক্ষমতা দখলের পর তালেবান নেতৃত্বের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার অঙ্গীকারও সাবেক সৈন্য এবং পুলিশকে লক্ষ্যবস্তু করা থেকে সশস্ত্র এই গোষ্ঠীর স্থানীয় কমান্ডারদের বিরত রাখতে পারেনি।
এমনকি সাবেক সরকারি সৈন্য ও পুলিশ সদস্যদের নির্বিচার হত্যাকাণ্ডে তালেবানের নেতৃত্বের সায় ছিল বলেও অভিযোগ করেছে এইচআরডব্লিউ। তবে দেশটিতে যেকোনো ধরনের প্রতিশোধমূলক হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ অস্বীকার করেন তালেবানের একজন মুখপাত্র।
বিবিসি বলছে, সাবেক সরকারের নিরাপত্তা সদস্য বা কর্মকর্তাদের ক্ষতি না করার বিষয়ে তালেবান যে অঙ্গীকার করেছিল তা পালন করতে যৌথ বিবৃতিতে ওই ২২ দেশ কাবুলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর কাছে আহ্বান জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘জোরপূর্বক নিখোঁজ এবং বিনা বিচারে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে যে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে তাতে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’
সংক্ষিপ্ত এই যৌথ বিবৃতি ইস্যু করে যুক্তরাষ্ট্র। পরে যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ঞাজাড় আরও ১৯টি দেশ এতে স্বাক্ষর করে। স্বাক্ষরকারী অন্য দেশগুলোর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান ও ইউক্রেনও রয়েছে।
বিবৃতিতে তালেবানের হাতে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উদ্বেগ জানানোসহ এসব কর্মকাণ্ডের তদন্তের দাবি জানানো হয়। বিবৃততে আরও বলা হয়, ‘নিজেদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমেই তালেবানকে বিচারের এই তৎপরতা আমরা অব্যাহত রাখবো।’
উল্লেখ্য, ২০ বছর পর গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান দখলে নেয় সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান। এরপর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে তালেবান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার ঘোষণা দেয়। অবশ্য বিশ্বের কোনো দেশই এখনও তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি।