নিজস্ব প্রতিবেদক
বিজয় না হওয়া পর্যন্ত ‘এক দফা’র আন্দোলন চলতেই থাকবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, এই আন্দোলন বিজয় না হওয়া পর্যন্ত চলতেই থাকবে এবং রোববার ভোর থেকে ৪৮ ঘণ্টার যে অবরোধ রয়েছে …এই অবরোধ শান্তিপূর্ণ অবরোধ। শান্তিপূর্ণভাবেই এই কর্মসূচি পালিত হবে।
শুক্রবার বিকেলে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজভী বলেন, সরকারের কোনো উসকানিতে আমাদের দলের নেতাকর্মী বা গণতান্ত্রিক যেসব রাজনৈতিক দল ও সমমনা দল অংশগ্রহণ করছেন প্রত্যেকেই পা না দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি পালন করে যাবেন। আমাদের আন্দোলন হচ্ছে জনগণ যাতে তার পছন্দমত প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে… এই অধিকারটা প্রতিষ্ঠার। এই আন্দোলন আদর্শের আন্দোলন, এটা জনগণের ন্যায় সঙ্গত আন্দোলন, বিবেকবান মানুষের বেড়ে ওঠার বিকশিত হওয়ার আন্দোলন। এই আন্দোলনে যারা সমর্থন দেবে, যারা গণতন্ত্রের পক্ষে, যারা মানুষের স্বাধীনতার পক্ষে, নাগরিক স্বাধীনতার পক্ষে এবং একটা স্বৈরাচারী দৈত্যের বিরুদ্ধে যিনি আজীবন স্বপ্ন দেখেন ক্ষমতায় থাকার তার বিরুদ্ধে প্রত্যেকেই এই গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সারথি হিসেবে থাকবেন।
‘গণবিরোধী আইন বুড়িগঙ্গায় ফেলা হবে’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, গতকাল সমাপ্তি ঘটেছে নিশি রাতের ভোট ডাকাতির জাতীয় সংসদের অধিবেশন। ৫ বছর ধরে ভুয়া এমপিরা সংসদে দাঁড়িয়ে কেবল স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া এবং বিএনপিকে নিয়ে মিথ্যাচার, খিস্তি-খেউর, কুৎসা আর আওয়ামীগের স্বার্থ চরিতার্থ করেছে। তারা সাধারণ জনগণের জন্য কল্যাণকর কিছুই করেনি।
বিএনপির এ নেতা অভিযোগ করে বলেন, মোট ২৭২ দিনের কার্য দিবসের এই সংসদকে আওয়ামী দলীয় আড্ডাবাজির আখড়ায় পরিণত করা হয়েছে। ৫ বছর ধরে এই অবৈধ সংসদে ১৬৫টি বিল পাস করেছে তার প্রায় সবই গণবিরোধী। এই ভুয়া সংসদকে রাবার স্ট্যাম্প বানিয়ে যেসব অবৈধ আইন পাস করা হয়েছে তা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সুষ্ঠু ভোটের এমপিরা বুড়িগঙ্গায় ভাসিয়ে দেবে।
‘একতরফা নির্বাচনের পাঁয়তারা’
রিজভী বলেন, আবারও দেশে একতরফা নির্বাচনের পাঁয়তারা চলছে। আওয়ামী দলদাস নির্বাচন কমিশন, আওয়ামী দলদাস পুলিশ ও দলদাস প্রশাসন সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছে। আমরা সারাদেশ থেকে খবর পাচ্ছি, বিএনপিকে নির্বাচন থেকে বাইরে রাখতে দলদাস আওয়ামী প্রশাসনকে নিয়ে এক অভিনব কর্দয মিশনে নেমেছে শেখ হাসিনা ও তার সরকার।
রিজভী আরও বলেন, তার (শেখ হাসিনা) নির্দেশে সামাজিক বেষ্টনীর আওতায় কার্ডের মাধ্যমে সুবিধাভোগী প্রায় ২ কোটি মানুষকে টার্গেট করেছে আওয়ামী লীগ ও স্থানীয় এমপিরা ও অনুগত প্রশাসনের কর্মকর্তারা। গত কয়েকদিন যাবত প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি উপজেলায় সরকারের বিভিন্ন দপ্তর হতে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর প্রকল্পের আওতায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সুবিধাপ্রাপ্ত উপকারী ভোগীদের নিয়ে সমাবেশ করছে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও নেতারা। প্রতিটি সমাবেশে ডিসি, এসপি, ইউএনওসহ থানা ওসিরাও উপস্থিত থাকছেন। এসব সমাবেশের উদ্দেশ্য আসন্ন সংসদ নির্বাচনে নৌকায় ভোট প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, ভোট কেন্দ্রে না গেলে কার্ড বাতিলেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
রিজভী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে মোট ২৯২ জনের অধিক নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন এবং মিথ্যা বানোয়াট মামলায় মোট ১ হাজার ৪৫ জনের অধিক নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
বিএসডি/এমএম