নিজস্ব প্রতিবেদক
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে নয় মাসের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে প্রবেশ করে এক লাইনম্যানকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতার বিরুদ্ধে। গুরুতর আহত লাইনম্যান পার্থ বাগচি (২৮) বর্তমানে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনাটি গতকাল সোমবার (২৭ মে) দুপুরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বোয়ালমারী উপজেলা জোনাল অফিসে ঘটেছে। অভিযুক্ত আজিজুল হক (৪৯) বোয়ালমারী পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার এবং পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক। তিনি কামারগ্রাম মহল্লার বাসিন্দা এবং মৃত শেখ আক্কাস আলীর ছেলে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা যায়, আজিজুল হকের বাসার নয় মাসের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় তার বিরুদ্ধে ৩৬ হাজার ৮৮২ টাকার আর্থিক পাওনা ছিল। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিল পরিশোধ না করায় সোমবার দুপুরে তার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত লাইনম্যান পার্থ বাগচি।
সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার খবরে ক্ষিপ্ত হয়ে আজিজুল হক দলবলসহ জোনাল অফিসে ঢুকে প্রকাশ্যে লাইনম্যান পার্থকে মারধর করেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, এ সময় চাবির আঘাতে পার্থ বাগচির মাথায় গুরুতর জখম হয়। পরে সহকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা আজিজুল হক বলেন, আমি সাধারণত বছরে দুইবার করে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করি, এটা বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন জানে। চলতি মাসে বিল বেশি আসায় মোবাইলে বিষয়টি জানতে চাইলে লাইনম্যানের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এরপরই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।
মারধরের ঘটনা স্বীকার করে তিনি বলেন, আমার ছেলেরা গিয়েছিল, কিছু চরথাপ্পর দিয়েছে। চাবি দিয়ে আঘাত করলে তার মাথায় কেটে যায়। তবে পরে অফিসেই জোনাল ম্যানেজারের উপস্থিতিতে লাইনম্যানের সঙ্গে হাত মেলানো হয়েছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে পল্লী বিদ্যুৎ বোয়ালমারী জোনাল অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুর রহমান মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, বিষয়টি মীমাংসা হয়ে গেছে, আমি এ নিয়ে কোনো কথা বলতে চাই না।
ফরিদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার এস এম নাসিরউদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিনের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর আমাদের কর্মীকে অফিসে ঢুকে মারধর করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বোয়ালমারী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহামুদুল হাসান বলেন, মঙ্গলবার (২৭ মে) সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এ ঘটনায় থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি।
তিনি বলেন, তবে স্থানীয় সূত্রে জানতে পেরেছি, ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পরপরই কিছু দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সহায়তায় বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।