ডেস্ক নিউজ-
বিশ্বজুড়ে চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের থাবায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। গেল ২৪ ঘণ্টায় প্রাণঘাতী ভাইরাসে বিশ্বে আক্রান্ত হয়েছেন পাঁচ লাখ ৫০ হাজার ২৪৮ জন এবং মারা গেছেন আট হাজার ৬৬৩ জন।
তার আগের দিন বিশ্বে করোনা আক্রান্ত নতুন রোগীর সংখ্যা ছিল পাঁচ লাখ তিন হাজার ২৩৭ জন এবং মৃতের সংখ্যা ছিল আট হাজার ৪৬ জন।
২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে করোনায় বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ৪৭ হাজার ১১ জন এবং মৃতের সংখ্যা বেড়েছে ৬১৭ জন। মহামারি শুরুর পর থেকে বিশ্বে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থ হয়ে ওঠাদের হালনাগাদ তথ্য প্রদানকারী ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস এ তথ্য জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) বাংলাদেশ সময় সকাল সোয়া ১০টা পর্যন্ত ওয়ার্ল্ডো মিটারসের চার্ট অনুযায়ী, করোনায় দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর হিসেবে বর্তমানে শীর্ষে আছে ব্রাজিল। দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম এই দেশটিতে বুধবার (১৪ জুলাই) করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৭ হাজার ৬৬৪ জন এবং এ রোগে মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৫৭৪ জনের।
এ তালিকায় ব্রাজিলের পরেই আছে এশিয়ার বৃহত্তম দ্বীপদেশ ইন্দোনেশিয়া। বুধবার দেশটিতে করোনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৫৪ হাজার ৫১৭ জন এবং মৃতের সংখ্যা ছিল ৯৯১ জন।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হওয়া ভারত রয়েছে এই তালিকায় তৃতীয় স্থানে। বুধবার ভারতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪১ হাজার ৮২৫ জন এবং মারা গেছেন ৫৮০ জন।
মহামারি শুরুর পর থেকে করোনায় মোট আক্রান্ত ও মৃত্যুর হিসেবে শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে করোনায় দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকায় চতুর্থ স্থানে আছে বলে জানাচ্ছে ওয়ার্ল্ডো মিটারসের চার্ট। বুধবার দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ হাজার ২৬৭ জন এবং মারা গেছেন ৩৫৯ জন।
দৈনিক আক্রান্তের হিসেবে চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ মৃত্যু হয়েছে রাশিয়ায়। এ দিন দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত নতুন রোগীর সংখ্যা ছিল ২৩ হাজার ৮২৭ জন এবং মৃতের সংখ্যা ছিল ৭৮৬ জন।
এছাড়া বুধবার করোনায় বিশ্বের আরও যেসব দেশে সংক্রমণ-মৃত্যু বেশি হয়েছে সে দেশসমূহ হলো– যুক্তরাজ্য (নতুন আক্রান্ত ৪২ হাজার ৩০২, মৃত্যু ৪৯), স্পেন (নতুন আক্রান্ত ২৬ হাজার ৩৯০, মৃত্যু ১০) ইরান (নতুন আক্রান্ত ২৩ হাজার ৩৭১, মৃত্যু ১৮৪), আর্জেন্টিনা (নতুন আক্রান্ত ১৯ হাজার ৬৯৭, মৃত্যু ৬১০) এবং কলম্বিয়া (নতুন আক্রান্ত ১৭ হাজার ২৩০, মৃত্যু ৪৯৮)।
তাছাড়া বিশ্বে বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা এক কোটি ২২ লাখ ৮৬ হাজার ২১ জন। এদের মধ্যে মৃদু উপসর্গ বহন করছেন এক কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৮৬৯ জন এবং গুরুতর অবস্থায় আছেন ৭৯ হাজার ১৫২ জন।
ওয়ার্ল্ডো মিটারসের তথ্য অনুযায়ী, মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১৮ কোটি ৯১ লাখ ৩৫ হাজার ৭ জন এবং এ রোগে মৃত্যু হয়েছে মোট ৪০ লাখ ৭৪ হাজার ৩০ জনের।
অবশ্য এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের সংখ্যাও কম নয়। মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত গত বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন মোট ১৭ কোটি ২৭ লাখ ৭৪ হাজার ৯৫৬ জন । এর মধ্যে বুধবার সুস্থ হয়েছেন তিন লাখ ৬৭ হাজার ৯৩৯ জন।
শ্বাসতন্ত্রের প্রাণঘাতী রোগ করোনা প্রথম শনাক্ত হয়েছিল চীনে। দেশটির সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়, করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে উহানে।
অবশ্য সম্প্রতি এক গবেষণায় জানা গেছে, ২০১৯ এর ডিসেম্বরের আগেই দেশটিতে বিক্ষিপ্তভাবে করোনায় আক্রান্ত রোগী ছিলেন।
চীনে প্রথম করোনা শনাক্তের এক মাসের মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই রোগ ছড়িয়ে পড়া শুরু করলে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। কিন্তু তারপরও সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ওই বছর করেনাকে বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।
বিএসডি/এমএম