আন্তর্জাতিক ডেস্ক
চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় বিশ্বজুড়ে সংক্রমিত হয়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। একই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও। গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় আট হাজার মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে শনাক্ত মানুষের সংখ্যা নেমে এসেছে পাঁচ লাখের নিচে।
এ দিকে টানা কয়েকদিন লক্ষাধিক সংক্রমণের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নতুন সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। যদিও সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে। অপর দিকে দৈনিক মৃত্যুতে বরাবরের মতো শীর্ষে রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ২০ কোটি ৩৪ লাখের ঘর ছাড়িয়েছে। অন্য দিকে মৃত্যুর সংখ্যাও এরই মধ্যে ৪৩ লাখ ছয় হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
সোমবার (৯ আগস্ট) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত এক দিনে সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন সাত হাজার ৯০৮ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যু কমেছে প্রায় সহস্রাধিক। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৪৩ লাখ ছয় হাজার ৯৪৮ জনে।
এছাড়া একই সময়ে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন চার লাখ ৬৯ হাজার ৯৪২ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমে এসেছে প্রায় এক লাখ। এতে মহামারির শুরু থেকে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়ে ২০ কোটি ৩৪ লাখ চার হাজার ৪৩৪ জনে দাঁড়িয়েছে।
শেষ ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে মুসলিম রাষ্ট্র ইরানে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৩৯ হাজার ৬১৯ জন। মহামারি করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৪১ লাখ ৫৮ হাজার ৭২৯ জন আক্রান্ত এবং ৯৪ হাজার ১৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
এ দিকে গত এক দিনে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন সংক্রমণের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে ২৪ হাজার ৩৯০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত তিন কোটি ৬৫ লাখ ৪৩ হাজার ৩৩৮ জন আক্রান্ত এবং ছয় লাখ ৩৩ হাজার ১১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
অপর দিকে গেল ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়ায়। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন এক হাজার ৪৯৮ জন। একই সময়ের মধ্যে নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৬ হাজার ৪১৫ জন।
এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩৬ লাখ ৬৬ হাজার ৩১ জন। আর মৃত্যু হয়েছে এক লাখ সাত হাজার ৯৬ জন রোগীর।
এ দিকে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল বর্তমানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মহামারি ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৩৮৮ জন। এছাড়া নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ৮৯৩ জন।
অন্য দিকে সংক্রমণ শুরু থেকে দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুই কোটি এক লাখ ৬৫ হাজার ৬৭২ জন ছাড়িয়েছে গেছে। এমনকি মৃত্যু হয়েছে পাঁচ লাখ ৬৩ হাজার ৪৭০ জন লোকের।
করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত। যদিও প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৪৪৭ জন। এছাড়া নতুন করে ৩৬ হাজার ৩৫ জন ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন। দেশটিতে মোট আক্রান্ত তিন কোটি ১৯ লাখ ৬৯ হাজার ৫৮৮ জন। আর মারা গেছেন চার লাখ ২৮ হাজার ৩৩৯ জন।
এছাড়া এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে ৬৩ লাখ পাঁচ হাজার ১৫৮ জন, রাশিয়ায় ৬৪ লাখ ৪৭ হাজার ৭৫০ জন, যুক্তরাজ্যে ৬০ লাখ ৬৯ হাজার ৩৬২ জন, ইউরোপের দেশ ইতালিতে ৪৩ লাখ ৯৬ হাজার ৪১৭ জন, মুসলিম রাষ্ট্র তুরস্কে ৫৯ লাখ ১৮ হাজার ৫৪০ জন, স্পেনে ৪৫ লাখ ৮৮ হাজার ১৩২ জন, জার্মানিতে ৩৭ লাখ ৯৭ হাজার ৮৩৬ জন এবং মেক্সিকোতে ২৯ লাখ ৬৪ হাজার ২৪৪ জন প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
অপর দিকে করোনায় সংক্রমিত হয়ে এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে এক লাখ ১২ হাজার ২২০ জন, রাশিয়ায় এক লাখ ৬৪ হাজার ৮৮১ জন, যুক্তরাজ্যে এক লাখ ৩০ হাজার ৩২০ জন, ইতালিতে এক লাখ ২৮ হাজার ২২০ জন, তুরস্কে ৫২ হাজার ১৯৬ জন, স্পেনে ৮২ হাজার ছয়জন, জার্মানিতে ৯২ হাজার ২৮১ জন এবং মেক্সিকোতে দুই লাখ ৪৪ হাজার ২৪৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। মূলত এরপর গত বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) প্রাণঘাতী ভাইরাসটিকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি।
বিএসডি/এমএম