আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গত বছর বিশ্বে খাবারের দাম ২৮ শতাংশ বেড়ে এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে এবং চলতি বছর খাবারের মূল্য স্থিতিশীল পরিস্থিতিতে ফেরার আশা একেবারে ক্ষীণ। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এফএওর খাদ্যমূল্য সূচকে গত বছর বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি বিক্রিত খাদ্যপণ্যের গড় পয়েন্ট ছিল ১২৫ দশমিক ৭; যা ২০১১ সালের ১৩১ দশমিক ৯ পয়েন্টের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। গত ডিসেম্বরে মূল্যসূচক পয়েন্ট সামান্য কমলেও তার আগের চার মাসে তা ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বজুড়ে গত এক বছরে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি এবং তুমুল চাহিদার কারণে খাদ্যের দাম আকাশচুম্বী হয়েছে।
বিশ্বজুড়ে খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে মুদ্রাস্ফীতিও বেড়েছে বলে জানিয়েছে এফএও। করোনাভাইরাসের সংকট থেকে বৈশ্বিক অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলেও সংস্থাটি সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, খাদ্যের উচ্চমূল্য আমদানি নির্ভর দেশগুলোতে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।
হালনাগাদ তথ্যে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষিবিষয়ক এই সংস্থা চলতি বছর মূল্যবৃদ্ধির চাপ কমতে পারে কি-না সে ব্যাপারে সুখবর দিতে পারেনি।
এক বিবৃতিতে সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ আব্দুল রেজা আব্বাসিয়ান বলেছেন, সাধারণত উচ্চ মূল্যের ফলে উৎপাদন বৃদ্ধির আশা করা হলেও যোগানের ব্যয় বৃদ্ধি, চলমান বৈশ্বিক মহামারি এবং অনিশ্চিত জলবায়ু পরিস্থিতির কারণে ২০২২ সালেও বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরার বিষয়ে আশার জায়গা খুব সামান্যই।
সারের দামের ঊর্ধ্বগতির পাশাপাশি বিদ্যুতের ব্যয় বৃদ্ধি কৃষকদের ফসল উৎপাদনের খরচ বাড়িয়ে দিয়েছে। যে কারণে আগামী বছর ফসল ফলনের সম্ভাবনা নিয়েও সন্দেহ দেখা দিয়েছে। সংস্থাটি বলছে, গত বছরের ডিসেম্বরে খাদ্য মূল্য সূচকে দুগ্ধজাত সব পণ্যের পাশাপাশি উদ্ভিজ্জ তেল এবং চিনির দাম উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
করোনাভাইরাসের অতি-সংক্রামক ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবের ব্যাপারে উদ্বেগ এবং দক্ষিণ গোলার্ধে গমের উৎপাদন হ্রাসের কারণে গত মাসে খাবারের মাসিক চাহিদা কমে গেছে। তবে সূচকের সব বিভাগেই গত বছর খাদ্যের মূল্য মোটাদাগে বেড়েছে এবং উদ্ভিজ্জ তেলের মূল্য রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে।
দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলে খরা এবং মালয়েশিয়ায় অসময়ের বন্যার কারণে তৈলবীজের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এর ফলে চলতি বছরের শুরুতে ফসলের ভবিষ্যৎ বাণিজ্যে অস্থিতিশীলতার আশঙ্কা করছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা।
সূত্র: রয়টার্স।
বিএসডি/এসএ