আলভেজের জন্য অবশ্য পরিস্থিতি হঠাৎই কেমন বদলে গেল। মাসখানেক আগে ব্রাজিলকে অলিম্পিকে সোনা জিতিয়েছেন, কদিন আগে ব্রাজিল দলে ফিরে নেইমারদের সঙ্গে অনুশীলন করেছেন। গত পরশু পেরুর বিপক্ষে ব্রাজিলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচেও খেলেছেন। এর আগে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে বাতিল হয়ে যাওয়া ম্যাচে পুরোনো সতীর্থ ও বন্ধু লিওনেল মেসির সঙ্গে আড্ডাও দিতে দেখা গেছে তাঁকে। সেই আলভেজ হঠাৎ শিরোনামে ক্লাব ছাড়ার খবরে।
সাও পাওলোর কোচ এখন আর্জেন্টিনার সাবেক স্ট্রাইকার এরনান ক্রেসপো। মাত্রই হাঁটি হাঁটি পা পা করে এগোতে থাকা কোচিং ক্যারিয়ারে গত মৌসুমে আর্জেন্টিনারই ক্লাব দিফেন্সা ই জুস্তিসিয়াকে দক্ষিণ আমেরিকার দ্বিতীয় সেরা ক্লাব শিরোপা কোপা সুদামেরিকানা (ইউরোপে ইউরোপা লিগের পর্যায়ের ট্রফি) জিতিয়ে এই মৌসুমে সাও পাওলোর কোচিংয়ের দায়িত্ব নিয়েছিলেন আর্জেন্টিনার সাবেক স্ট্রাইকার। তাঁকে আলভেজের ক্লাব ছাড়ার খবর জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে টুইটারে জানিয়েছেন সাও পাওলোর ক্রীড়া পরিচালক কার্লোস বেলমন্ত।
টুইটারে আলভেজের সঙ্গে ক্লাবের সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দিয়ে বেলমন্ত লিখেছেন, ‘আমরা সিদ্ধান্তটা নিয়ে নিয়েছি, কোচ এরনান ক্রেসপোকেও জানিয়ে দিয়েছি। সিদ্ধান্তটা হলো, দানি আলভেজ আর আমাদের দলের অংশ থাকবেন না।’ সঙ্গে জুড়ে দেন, ‘সাও পাওলো কোনো একজন খেলোয়াড়ের চেয়েও বড় কিছু।’
ব্রাজিলিয়ান পত্রিকা ‘ও গ্লোবো’কে উদ্ধৃত করেই সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, সাও পাওলোর কাছে ১৮ কোটি টাকার বেশি বেতন পাওনা ছিলেন আলভেজ। সাও পাওলোর ক্রীড়া পরিচালক বেলমন্ত বলেছেন, ক্লাব দেনার অঙ্কটা স্বীকার করে সমঝোতার উদ্দেশ্যে আলভেজকে ভিন্ন একটা চুক্তির প্রস্তাব করেছিল, কিন্তু সেটি আলভেজ ফিরিয়ে দেন।
‘তাঁর প্রতিনিধিরা আমাদের জানিয়ে দিয়েছিলেন যে তাঁর প্রতি সাও পাওলোর যে আর্থিক দেনা আছে, সেটির ব্যাপারে সমঝোতা না হলে দানি আলভেজ (ব্রাজিল জাতীয় দলে দায়িত্ব পালন শেষে) সাও পাওলোতে ফিরবেন না। সাও পাওলো এই দেনা স্বীকার করছে। গত সপ্তাহে আমরা সমঝোতার উদ্দেশ্যে তাঁকে অন্য একটা চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছি, কিন্তু চুক্তিটা খেলোয়াড়ের প্রতিনিধিরা মানেননি’ – বলেছেন বেলমন্ত।
তবে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স লিখেছে, সাও পাওলোর সঙ্গে শুধু আর্থিক দেনাই নয়, আরও একটা ব্যাপারেও টানাপোড়েন ছিল আলভেজের সম্পর্কে। আগস্টে আলভেজ যে অলিম্পিকে খেলতে গিয়েছিলেন, সেটি পছন্দ হয়নি সাও পাওলো ক্লাবের।
সেভিয়া, বার্সেলোনা, জুভেন্টাস ও পিএসজির মতো ক্লাবের জার্সিতে ১৭ বছর ইউরোপ মাতিয়ে ২০১৯ সালে সাও পাওলোতে ফেরেন আলভেজ। রয়টার্স লিখেছে, ছোটবেলায় এই ক্লাবকেই সমর্থন করতেন ব্রাজিলিয়ান রাইটব্যাক। তিনি রাইটব্যাক হলেও ক্লাবের ১০ নম্বর জার্সিটাও তখন দেওয়া হয়েছিল আলভেজকে।
কিন্তু সেই সম্পর্কের শেষটাই কীভাবে হলো! রয়টার্সে লেখা, ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের সাধারণ হয়ে ওঠা ‘প্রথা’র সর্বশেষ শিকার তিনি। কী প্রথা? যে প্রথায় ক্লাবগুলো খেলোয়াড় ও কোচদের ঠিকমতো বেতন পরিশোধ করে না!
বিএসডি/এএ