নিজস্ব প্রতিবেদক
পাহাড়ের সব হত্যাকাণ্ডের বিচার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে চট্টগ্রামে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) নগরের প্রেসক্লাব চত্বরে পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এতে বক্তারা নানা বৈষম্যমূলক নীতির কারণে তিন পার্বত্য জেলায় উপজাতিদের তুলনায় বাঙালিরা পিছিয়ে পড়ছে বলে মন্তব্য করেন।
এসময় বক্তারা বলেন, নানা বৈষম্যের শিকার হয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে পার্বত্য অঞ্চলের বাঙালি পরিবারগুলো। উপজাতি পরিবারগুলো রাষ্ট্রীয় যেসব সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে বাঙালি পরিবারগুলো তা পাচ্ছে না।
তারা বলেন, আমরা পাহাড়িদের দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছি। আমাদের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে হেয় করা হচ্ছে। আমাদের ছেলে-মেয়েদেরও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপজাতিদের দ্বারা হেনস্তার শিকার হতে হয়। রাজনৈতিকভাবে তিন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত। সব জায়গায় নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধি নিশ্চিত করা হোক।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমির শাহাজাহান চৌধুরী বলেন, ব্যাংক লোন নিলে উপজাতিদের কোনো সুদ দিতে হয় না। কিন্তু বাঙালিদের চড়া সুদ দিতে হয়। উপজাতিরা ব্যাংক লোন পরিশোধ করতে না পারলে তাদের অনেক ক্ষেত্রেই তা মওকুফ করা হয়। কিন্তু বাঙালিরা পরিশোধ করতে না পারলে তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করা হয় এবং জেলখানায় যেতে হয়।
বক্তারা বলেন, উপজাতিদের জন্য আয়কর ফ্রি কিন্তু বাঙালিদের দিতে হয়। অর্থনৈতিকভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালিরা গরিব থেকে গরিব হচ্ছে আর উপজাতিরা দিন দিন ধনী থেকে ধনী হচ্ছে। আয়কর প্রদানে পার্বত্য অঞ্চলের সব সম্প্রদায়ের জন্য একই নিয়ম চালু করা উচিত।
তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সব সমস্যা সমাধানের জন্য একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিশেষ কমিশন গঠনের বিকল্প নেই। ভূমি সমস্যা সমাধান সবাইকে সঙ্গে নিয়ে করতে হবে। ১৯০০ সালের শাসনবিধি বাতিলসহ বৈষম্য, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজমুক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম গঠন এবং পার্বত্য চুক্তি বাতিল করে দেশের সাংবিধানিক ধারাগুলো প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
ঐক্য পরিষদেই প্রধান সমন্বয়কারী তৌহিদ আজাদের সভাপতিত্বে এবং সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম মুজাহিদের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আবু বকর, শ্রমিক কল্যাণ পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান, বান্দরবান জেলা নাগরিক পরিষদের সাবেক সভাপতি আতিকুর রহমান, ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছাদেক, ছাত্রশিবির বান্দরবান জেলার সাবেক সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম।