স্টাফ রিপোর্টার
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থাকতে হলে উপনির্বাচনে জিততেই হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। গত বৃহস্পতিবার কলকাতার ভবানীপুর আসনে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। রোববার (৩ অক্টোবর) সকাল থেকে ভোটগণনা শুরু হয়। ভোটগণনা হচ্ছে শমসেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুর আসনেও।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ভবানীপুর উপনির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয় নিয়ে কোনো সংশয় নেই তৃণমূল শিবিরে। চিন্তা শুধু ব্যবধানের অংক নিয়ে। উপনির্বাচনী প্রচারপর্বে মমতা থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়— সকলের বক্তব্যেই বার বার ফিরে এসেছে এই ব্যবধানের প্রসঙ্গ।
উপনির্বাচনে কম মানুষ ভোট দিতে আসেন, এটা জেনেই তৃণমূল এ বার জোর দিয়েছিল ‘ভোট দিতে আসুন’ ডাকে। গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে ভোটদানের হার মোটামুটি ভালো ছিল। সেদিক থেকে খানিকটা আশ্বস্ত পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল।
সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, তৃতীয় রাউন্ড শেষে ৪ হাজার ৬০০ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে ইভিএম গণনার প্রথম রাউন্ড শেষে প্রায় ২ হাজার ৭৯৯ ভোটে এগিয়ে ছিলেন মমতা। প্রথম রাউন্ডে মমতা পেয়েছিলেন ৩ হাজার ৬৮০ ভোট। বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল পেয়েছিলেন ৮৮১ ভোট এবং সিপিএম প্রার্থী শ্রীজীব বিশ্বাস ৮৫ ভোট। চূড়ান্ত ফল ঘোষণার আগে মোট ২১ রাউন্ড গণনা হবে।
এদিকে দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনের ফলের অপেক্ষায় রাজ্যজুড়ে টানটান পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কারণ গত বৃহস্পতিবার শেষ হওয়া এ উপনির্বাচনের ফলেই যে নির্ধারিত হবে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ। তৃতীয়বারের মতো কি মমতাই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসতে চলেছেন, নাকি ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের কাছে ভবানীপুরে হারতে যাচ্ছেন?
তবে মমতার পরাজয়ের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। রোববার সকাল ৮টা থেকে ভোটগণনা শুরু হয়েছে। গণনা হবে মোট ২১ রাউন্ড। ভোট গণনাকেন্দ্রগুলোতে তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, রোববার পোস্টাল ব্যালট গণনা শুরু হতেই এগিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রিত্ব টিকিয়ে রাখতে ভবানীপুরের এই উপনির্বাচনে জয়ের বিকল্প নেই মমতার। কারণ গত এপ্রিল-মে মাসে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম বিধানসভা আসনের নির্বাচনে হেরে গিয়েছিলেন মমতা। ভারতের নির্বাচনী বিধি বলছে, কোনও জনপ্রতিনিধি ভোটে হেরে পদে আসীন হতে গেলে তাকে ছয় মাসের মধ্যে ফের নির্বাচনে জয়ী হতে হয়।
তবে এই উপনির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষেই বাজি ধরছেন অনেকে। পশ্চিমবঙ্গের বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার এক প্রতিবেদনে বলছে, উপনির্বাচনে জেতা আসনেও জয় পাওয়া যে কঠিন, সে অভিজ্ঞতা রয়েছে বিজেপির। ২০১৯ সালে বিজেপির রাজ্য সভাপতি স্বয়ং দিলীপ ঘোষের খড়গপুর সদরও তৃণমূলের কাছে হারাতে হয়েছিল গেরুয়া শিবিরকে।
আর ভবানীপুরে গত বিধানসভা নির্বাচনে তো বড় ব্যবধানে জিতেছে তৃণমূল। তার ওপর উপনির্বাচনে আবার প্রার্থী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোট পরার হারও সন্তোষজনক নয়। তাই জেতার আশা নয়, বরং কত ভোটের ব্যবধানে পরাজয় সেই অংকই কষছে বিজেপি শিবির।
বিএসডি/এমএম