রেকর্ড শব্দটা ভারতে এখন আর নতুন কিছু নয়। প্রতিদিনই দেশটিতে করোনাভাইরাসে সংক্রমণ ও মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টাতেও দেশটিতে করোনায় মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হয়েছে। এ সময়ে করোনায় সংক্রমিত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজার ১৮৭ জনের।
আজ শনিবার এনডিটিভির খবরে জানা যায়, ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৪ লাখ ১ হাজার মানুষ। আগের কয়েক দিনের তুলনায় সংক্রমণ কিছুটা কমেছে।
এই প্রথম ভারতে একদিনে চার হাজারের বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। আর এক সপ্তাহে চতুর্থবারের মতো দৈনিক সংক্রমণ চার লাখ ছাড়াল।
এ নিয়ে ভারতে করোনায় মোট দুই লাখ ৩৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হলো। আর দেশটিতে মোট সংক্রমিত হয়েছে ৩৭ লাখ ২৩ হাজার ৪৪৬ জন।
সংক্রমণ ঠেকাতে ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে লকডাউন ও কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে। তামিলনাড়ুতে দুই সপ্তাহের কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে। আর কর্ণাটকে দুই সপ্তাহের লকডাউন দেওয়া হয়েছে। মণিপুরে ১৭ মে পর্যন্ত কারফিউ বাড়ানো হয়েছে।
এ বছরের জানুয়ারি মাসে ভারতে সবচেয়ে বড় পরিসরে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। তবে অনেক রাজ্যে টিকা নিয়ে সংকট দেখা দেয়। ফলে টিকাদান কর্মসূচি ধীর গতিতে চলতে শুরু করে।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের হিসাব অনুসারে করোনায় সংক্রমণ ও মৃত্যুর হারে যুক্তরাষ্ট্রের পরেই ভারতের অবস্থান। তাঁদের হিসাব অনুসারে বিশ্বে এ পর্যন্ত করোনায় মোট সংক্রমিত হয়েছে ১৫ কোটি ৭৫ লাখ ৩০ হাজার ৭২৯ জন। মৃত্যু হয়েছে ৩২ লাখ ৮৩ হাজার ৭২৭ জনের। আর সুস্থ হয়েছেন ১৩ কোটি ৪৯ লাখ ৫৪ হাজার ৯৪৭ জন।
ভারতে এত সংক্রমণের জন্য করোনার ভারতীয় ধরনকে অনেকাংশে দায়ী করা হচ্ছে। এ ছাড়া সংক্রমণ বৃদ্ধির মধ্যেও নির্বাচন অনুষ্ঠান, ধর্মীয় উৎসব ও খেলাধুলার আয়োজনকে দায়ী করা হচ্ছে।অক্সিজেন, জরুরি ওষুধ, হাসপাতালে শয্যার অভাবসহ নানা গুরুতর সংকটে দেশটির স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে—এমন আশঙ্কার কথা বিজ্ঞানীরা আগে জানালেও তাতে গুরুত্ব না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে।
এনডিটিভির তালিকা অনুসারে, ভারতে করোনার সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি মহারাষ্ট্রে। তারপর রয়েছে কর্ণাটক, কেরালা, উত্তর প্রদেশ, তামিলনাড়ু, দিল্লি, অন্ধ্র প্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ। ছত্তিশগড়, রাজস্থান, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ ও হরিয়ানার পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক।
এমন পরিস্থিতিতে ভারতের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। ভারতের করোনা সংকটে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, সৌদি আরব, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি দেশ ও সংস্থা জরুরি চিকিৎসাসহায়তার ঘোষণা দিয়েছে। বিদেশি সহায়তা ভারতে পৌঁছাচ্ছে।