নিজস্ব প্রতিবেদক:
ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বচন ঘিরে দেশজুড়ে সংঘাতের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, ‘সন্ত্রাস ও সংঘর্ষ যেন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। এখন ভোটযুদ্ধে যুদ্ধ আছে, ভোট নেই।’
আজ বুধবার পঞ্চম দফার ইউপি নির্বাচনে সাভারের আশুলিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও আশুলিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কয়েকটি ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে এক লিখিত প্রতিক্রিয়ায় এই কথা বলেছেন মাহবুব তালুকদার। ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম দেখে তিনি হতাশা প্রকাশ করেন।
মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘সন্ত্রাস ও সংঘর্ষ যেন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। এখন ভোটযুদ্ধে যুদ্ধ আছে, ভোট নেই। ইউপি নির্বাচনে এখন উৎসবের বাদ্যের বদলে বিষাদের করুণ সুর বাজছে। কিন্তু নির্বাচন ও সন্ত্রাস একসঙ্গে চলতে পারে না। নির্বাচনী সন্ত্রাস প্রতিহত করতে হলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের প্রতিঘাত আরও জোরদার করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সন্ত্রাসের কারণ অনুসন্ধান করে তা থেকে অব্যাহতির উপায় উদ্ভাবন অপরিহার্য। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রথা উঠিয়ে না দিলে সন্ত্রাস ও সংঘর্ষ উত্তরোত্তর বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা অবশ্যই সন্ত্রাসমুক্ত নির্বাচন চাই।’
নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, কয়েকজন সংসদ সদস্য সরাসরি আচরণবিধি লঙ্ঘন করে চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কলুষিত করেছেন। কেবল চিঠি দেওয়া ছাড়া তাদের সম্পর্কে আর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। কেউ কেউ সেই চিঠি উপেক্ষা করেছেন। এজন্য আইনের কঠোর প্রয়োগ অনিবার্য ছিল। কিন্তু নির্বাচন প্রক্রিয়া সংস্কার না করা হলে তাদের সম্পর্কে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়। অন্যান্য যারা আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে সামান্য অর্থদণ্ড ছাড়া অন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, ‘মানবাধিকারের আলোচনা এখন তুঙ্গে। মানবাধিকার উৎসারিত হয় ভোটের অধিকার থেকে। আমাদের সংবিধানের স্পিরিটই হচ্ছে তাই। জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা ও রক্ষা করা এখনও সুদূরপরাহত। গণতন্ত্র ও মানবাধিকার একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। একমাত্র নির্ভেজাল গণতন্ত্রই মানবাধিকারের গ্যারান্টি দিতে পারে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও এর প্রাতিষ্ঠানিক রূপদানের জন্য অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ আইনানুগ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।’
এর আগে সাভারে কয়েকটি ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করে মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘কোথাও কোনো লোকজন নাই। প্রিসাইডিং অফিসারের সামনে সিল মারছে… সাক্ষী আছেন, সাংবাদিকরা দেখেছেন। অথচ কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় নাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ আছে, র্যাব আছে, কেউ কিছু বলেনি। কী নির্বাচন করছি আমরা?’
নির্বাচনে অনিয়মের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রিটার্নিং কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছি। উনিই এখানে কমিশন। উনি যেটা ভালো বোঝেন, সেভাবে ব্যবস্থা নেবেন।’
বিএসডি/ এলএল