আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইউক্রেনের বন্দর নগরী মারিওপোলের সেনাসদস্য ও বাসিন্দাদের আত্মসমর্পণ করার জন্য রোববার পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল রাশিয়া।
কিন্তু ইউক্রেনীয়রা এতে কর্ণপাত না করায় রুশ বাহিনীর বোমায় গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মারিওপোলের বহু স্থাপনা।
রুশ হামলার পর ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্মিহাল এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবার বলেন, এ শহরের আর কোনো অস্তিত্ব নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কুলেবা বলেন, মারিওপোলের আর কোনো অস্তিত্ব নেই। অল্প কিছু বাহিনী ও সাধারণ বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ এখনও বেঁচে আছে। কিন্তু তাদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে রুশ বাহিনী। তারা প্রতিদিন বাঁচার জন্য লড়াই করে যাচ্ছে। তবে রাশিয়ার আচরণ দেখে বোঝা যাচ্ছে, যেকোনো মূল্যে ওরা শহরটাকে মাটিতে মিশিয়ে দিতে চায়।
এদিকে ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান ৫৫তম দিনে সোমবার রাতে ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি শহরে রুশ বাহিনী বোমাবর্ষণ করেছে। পশ্চিমাঞ্চলীয় লাভিভ শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ৭ জন নিহত হয়েছে।
এ ছাড়া খারকিভ শহরে আবাসিক ভবনের ওপর রুশ বাহিনী গোলাবর্ষণ করলে অন্তত দু’জন বেসামরিক লোক নিহত হয়। রাজধানী কিয়েভেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, কিয়েভ দখলের চেষ্টা করলে প্রতিরোধের মুখে পিছু হটার পর পূর্ব ইউক্রেনে আগ্রাসনের নতুন ধাপ শুরু করেছে রুশ বাহিনী।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পূর্ব ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চলকে লক্ষ্য করে হামলা জোরদার করেছে রাশিয়া। অঞ্চলটির একাংশ মস্কোপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে।
সোমবার মধ্যরাতে টেলিগ্রামে দেওয়া বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা এখন নিশ্চিত করছি, রুশ বাহিনী দনবাস অঞ্চলের জন্য লড়াই শুরু করেছে। দীর্ঘ সময় ধরে তারা এর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তবে এখানে যত জন রুশ সেনা নিয়ে আসা হোক না কেন আমরা লড়াই করব। আত্মরক্ষার এই লড়াই চালিয়ে যাব আমরা।’
রুশ বাহিনীর বড় ধরনের হামলার শঙ্কা থেকে এর আগেই দনবাসের মানুষজনকে ইউক্রেনের পশ্চিম অংশ সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল দেশটির কর্তৃপক্ষ।
দনবাসের নিয়ন্ত্রণ মস্কোর জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর নিয়ন্ত্রণ নিলে ২০১৪ সালে রাশিয়ার দখলকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সঙ্গে করিডর তৈরি হবে।
এদিকে সোমবার ইউক্রেনের শতাধিক সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছেন রুশ সেনারা। রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়, রুশ সেনাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনের সেনাদের বেশ কিছু সেনাঘাঁটি ধ্বংস হয়েছে।
বিএসডি/ এমআর