ক্রীড়া ডেস্ক,
ফুটবলের দেশ পর্তুগালের জাতীয় ক্রিকেট দলে সুযোগ পেয়েছেন বাংলাদেশের এক অলরাউন্ডার। তার নাম মোহাম্মদ সিরাজউল্লাহ খাদিম নিপু।
পর্তুগাল টি-টোয়েন্টি দলের অন্যতম অলরাউন্ডার তিনি। বাঁহাতি মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান তিনি। ব্যাট চালানোর পাশাপাশি বলও করেন দুর্দান্ত। দলের মিডিয়াম পেসার তিনি।
গত ১৯ আগস্ট মাল্টার বিপক্ষের পর্তুগালের হয়ে অভিষেক ঘটে বাংলাদেশের এই ক্রিকেটারের।
ওই ম্যাচে পর্তুগাল ৬ উইকেটে জয় লাভ করে। অভিষেক ম্যাচে নিপু চার ওভারে ২৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
জানা গেছে, বাংলাদেশ দলের বর্তমান সময়ের সেরা তারকা মুশফিক, সাকিব ও তামিমের এক সময়ের সতীর্থ ছিলেন নিপু। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলার স্বপ্ন নিয়ে বিকেএসপিতে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন। বিকেএসপিতে তার দক্ষতায় মুগ্ধ হন নির্বাচকরা। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব -১৭, ১৯, ২৩ দলের পাশাপাশি বাংলাদেশ ‘এ’ দলের জন্য নির্বাচিত হন নিপু।
অস্ট্রেলিয়ার ডারউইন প্রিমিয়ার লিগেও খেলেছেন সিরাজউল্লাহ খাদিম নিপু। সে সময় একজন বিদেশি খেলোয়াড় হিসেবে অসাধারণ পারফরম্যান্স করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কর্মকর্তাদের মুগ্ধ করেছিলেন নিপু।
শন উইলিয়ামস বাংলাদেশের হাই পারফরম্যান্স (এইচপি) স্কোয়াডের কোচ থাকা কালে নিপুর খেলা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন। সে সময় তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, নিপু বাংলাদেশের জাতীয় দলের পরবর্তী তারকা অলরাউন্ডার হবেন।
২০০৬ সালে শ্রীলংকায় অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব -১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ স্কোয়াডে ছিলেন নিপু।
উইলিয়ামসই নিপুকে ২০০৭ সালে অনূর্ধ্ব -১৯ বিশ্বকাপের পর ডারউইন ক্লাবের হয়ে খেলতে পাঠান।
ঘরোয়া ক্রিকেটেও নজরকাড়া পারফরম্যান্স ছিল নিপুর। ২০০৫ সালে সিলেট বিভাগের হয়ে খেলে প্রথম শ্রেণিতে অভিষেক ঘটে সিরাজউল্লাহ খাদিম নিপুর। তিনি সে সময়ে জন্য দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন। তিনি ১৭ বছর বয়সে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে খেলেছিলেন এবং পরবর্তীতে অনেক আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের বিভিন্ন দলের হয়ে খেলেছিলেন।
২০০৯ সালে হবিগঞ্জে এক খেলায় বাম চোখে আঘাত পান। যে কারণে ২২ গজের মাঠ থেকে বেশ কিছুদিনের জন্য ছিটকে পড়েন।
পর্তুগালের বর্ণিল কর্মজীবনের সঙ্গে নেশার মতো শরীরে মিশে যাওয়া ক্রিকেটকে আগলে রেখেছেন ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার এই যুবক। কাজের ফাঁকে সময় বের করে খেলাটাকে চালিয়ে নিয়ে গেছেন। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় হতে না পারলেও পর্তুগালে জাতীয় দলের খেলোয়াড় হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন। এই অর্জন বাংলাদেশের জন্য তথা ক্রিকেটপাগল বাংলাদেশিদের জন্য গর্বেরই বটে।