২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর ইন্টার মায়ামির ট্রফি জয়ের সম্ভাবনা কখনোই ৪১ শতাংশের ওপরে ওঠেনি। সেই মায়ামি এখন নিজেদের ইতিহাসের প্রথম শিরোপা জয় থেকে মাত্র এক ধাপ দূরে দাঁড়িয়ে। এবার তাদের সম্ভাবনা এতটাই জোরাল যে না জিতলেই বরং সেটাকে অপ্রত্যাশিত মনে হবে।
যাঁর ছোঁয়ায় ইন্টার মায়ামির এই বাঁকবদল, তিনি লিওনেল মেসি। মায়ামিতে মেসির শুরুটা স্বপ্নের চেয়ে সুন্দর হয়েছে। তিনি আসার আগে যে দলটা সর্বশেষ ১০ ম্যাচে মাত্র ১টি জিতেছিল, সেই দলই তাঁর ভেলায় চড়ে টানা ৬ ম্যাচ জিতে পৌঁছে গেছে লিগস কাপে ফাইনালে।
আগামীকাল বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায় শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে মায়ামির প্রতিপক্ষ নাশভিল। একে তো মায়ামির প্রথম ফাইনাল, তার ওপর মেসির আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা—সব মিলিয়ে ফাইনালের টিকিটের দামও আকাশ ছুঁয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল জানিয়েছে, ফাইনালের টিকিটের সর্বনিম্ন দাম ৪৬০ ডলার (৫০ হাজার টাকা)। আর সর্বোচ্চ মূল্যের টিকিটের দাম রাখা হয়েছে ১১ হাজার ৯০০ ডলার (১৩ লাখ টাকার কিছু বেশি)। সবচেয়ে দামি টিকিটের আসনটা মেসিদের ডাগআউটের ঠিক পেছনেই।
আগামীকাল ফাইনাল হবে নাশভিলের মাঠ জিওডিস পার্ক স্টেডিয়ামে। নাশভিলের সব ম্যাচেরই টিকিট অনলাইনে বিক্রি করছে টিকিট বিক্রয় ও বিতরণ কোম্পানি টিকিটমাস্টার ইন্টারটেইনমেন্ট। তাদের ওয়েবসাইট ঘুরে দেখা গেছে, ফাইনালের একেকটা টিকিটের ‘আগুন’ দাম। এ মাঠে নাশভিলের পরে ম্যাচ আগামী ৩ সেপ্টেম্বর শার্লটের বিপক্ষে। অথচ সেই ম্যাচের সবচেয়ে দামি টিকিটের দাম অনেক কম—৩৩৫ ডলার (৪১ হাজার টাকা)। ‘মেসি-ইফেক্ট’-এর কারণেই যে টিকিটের দাম তরতরিয়ে বেড়েছে, সেটা না বললেও চলছে।
জিওডিস পার্ক স্টেডিয়ামের দর্শক ধারণক্ষমতা ৩০ হাজার। সব টিকিট কয়েক মিনিটের মধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে। তবু একটা টিকিটের আশায় বহু মানুষ বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানে ফোন করছেন। মায়ামি থেকে আসা অনেকে নাশভিল সমর্থকদের কাছ থেকে আরও বাড়তি দামে টিকিট কিনছেন।
মেসিদের অ্যাওয়ে ম্যাচে টিকিটের এমন চাহিদা এটাই প্রথম নয়, ৬ আগস্ট ডালাসের বিপক্ষে ইন্টার মায়ামির ম্যাচের টিকিট মাত্র ১০ মিনিটে শেষ হয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলে সেটাই ছিল প্রতিপক্ষের মাঠে মেসির প্রথম ম্যাচ। বিপুল লাভের আশায় প্রতিপক্ষের সমর্থকেরা অবলীলায় নিজেদের টিকিট মায়ামির সমর্থক ও মেসির ভক্তদের কাছে বিক্রি করেছেন। গত মঙ্গলবার ফিলাডেলফিয়া ইউনিয়নের বিপক্ষে সেমিফাইনালের আগেও এমনটা দেখা গেছে। ফিলাডেলফিয়া কোচ জিম কার্টিন সমর্থকদের কাছে টিকিট বিক্রি না করার আকুতি জানালেও লাভ হয়নি। নাশভিলের সমর্থকেরাও একই কাজ করে চলেছে।
নাশভিল যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি অঙ্গরাজ্যের দল। কাল শুধু মায়ামি জিতলেই নয়, নাশভিল জিতলেও সেটা হবে টেনেসির ক্রীড়াঙ্গনের ইতিহাসে প্রথম বড় শিরোপা। কিন্তু ‘মেসি-ইফেক্ট’ সেটা হতে দেবে তো!