ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে সংস্থাটির মেয়রকে এডিসের লার্ভা উপহার দেওয়ার কর্মসূচি পালন করেছে ‘বিক্ষুদ্ধ পুরান ঢাকার বাসিন্দারা’।
কর্মসূচি শেষের দিকে উপস্থিত বাসিন্দাদের হাত থেকে লার্ভার পাত্র কেড়ে নেন ৩১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিল শেখ মোহাম্মদ আলমগীরের এক সহকারী। পরে কাউন্সিলর ও তার সহকারী লার্ভার কাঁচের পাত্র নিয়ে দীর্ঘ সময় নগর ভবনের সিঁড়িতে অবস্থান করলেও মেয়রের সাড়া না পাওয়ায় সেই লার্ভা নিয়ে স্থান ত্যাগ করেন।
রোববার (২৯ আগস্ট) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
কর্মসূচিতে পুরান ঢাকার বংশালের বাসিন্দা আলাউদ্দিন বলেন, আমরা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্যই তাকে লার্ভা উপহার দিতে এসেছি। এই লার্ভা কামরাঙ্গীর চর থেকে নিয়ে এসেছি। আমাদের ঢাকাবাসী জলাবদ্ধতা মশা আর ডেঙ্গুতে আতঙ্কিত। প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে। হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। এর থেকে বাঁচার জন্যই এখানে আসা। আমরা ঘুমাতে পারছি না।
এদিকে তাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে তাদের কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়েছেন রাজধানীর জুরাইনের বাসিন্দা মিজানুর রহমান। যিনি ওয়াসার পানি দিয়ে শরবত বানিয়ে এমডিকে খাওয়াতে চেয়ে আলোচনায় এসেছিলেন। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আমরা এমন এক শ্বাসরূদ্ধকর অবস্থায় বসবাস করছি। এখানে যে দাঁড়াবো তাতেও সবাই আতঙ্কিত হয়ে আছে। মনে হচ্ছে তারা যেন কোনও এক যুদ্ধবিদ্ধস্ত এলাকায় এসেছেন। আপনারা নগর ভবনের সামনে দেখেন ময়লা পড়ে আছে। উল্টাপাশে পানি জমে আছে। এই হচ্ছে মশকনিধনে দক্ষিণ সিটির অবস্থা। এই প্রশ্নের উত্তর দক্ষিণের মেয়র কীভাবে দিবেন? তিনি আরও বলেন, আমি যেই অঞ্চলে কোনও রকম কার্যক্রম নেই। আমার এলাকায় এখন পর্যন্ত ৯ জন মারা গেছে। মানুষ টাকার কারণে চিকিৎসা করতে পারছে না। খেতে পারছে না। তাদের কোনও রকম ভ্রুক্ষেপ নেই। তারা জমিদার হয়ে বসে আছেন। যেন আমরা প্রজা আর তারা রাজা। তাদের সামনে এমন প্রোগ্রাম করে কাজ হবে না। চোখে আঙ্গুল দিয়েই কথা বলতে হবে। কারণ আমাদের জীবনের তো মূল্য আছে। এসময় দক্ষিণ সিটির ৩১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের এক সহযোগি বারবার তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন এটা সাঈদ খাকনের নাটক।
উপস্থিতিত সাংবাদিকরাও এতে বিরক্তি প্রকাশ করেন। জবাবে মিজানুর রহমান বলেন, তার উত্তর নেন। ২০১৯ সালে যখন ঢাকা শহরে ডেঙ্গু ছিলো তখন আমরা এখানে দাঁড়িয়েছিলাম। যেদিন এখানে দাঁড়াবো তার আগের দিন আমাকে ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছিলো। সাঈদ খোকনের পক্ষে আমরা আসিনি। আপনি তাপসের কথা বলতে আসছেন? আসলে সাঈদ খোকন ও তাপসের মধ্যে কোনও প্রার্থক্য নেই। লজ্জা রাইখেন, লজ্জা। আসল সমস্যা হচ্ছে মেয়র জনগণের কারছে কোনও রকম জবাব দিতে বাধ্য না। পরে সেই এডিসের লার্ভার কাঁচের পাত্রটি নিয়ে যান কাউন্সিলর। তিনি পাত্রটি হাতে তুলে নিয়ে বলেন, এই কাজটি করা হয়েছে আমাদের সেবা কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে।
আমি পুরান ঢাকার কাউন্সিলর, তারা যেমন ভাবে বলছে সেই অর্থে পুরান ঢাকায় ডেঙ্গু রোগী নেই। মশার বিস্তার নেই। আমরা মশক নিধনে, এডিসের লার্ভা ধ্বংসে সর্বোচ্চ কাজ করে যাচ্ছি। এসময় বিপুল সংখ্যক আনসার সদস্যরা নগর ভবনের সামনে অবস্থান নেন। তাদের সঙ্গে বেশ কয়েকজন পুলিশের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
বিএসডি/এমএম