যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই বাংলাদেশি পোশাকের বড় বাজার। তবে ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসের পর পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে বাজারটিতে রপ্তানি কমে যায়। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে ২০১৯ সালে অবস্থার পরিবর্তন হতে শুরু করে। ইতিমধ্যে কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নেও ব্যাপক অগ্রগতি হয় বাংলাদেশের। তাতে শেষ পর্যন্ত ২০১৯ সালে ৫৯৩ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়। গত বছরও শুরুটা দুর্দান্ত হয়েছিল। পরে অবশ্য করোনার থাবায় রপ্তানি নিম্নমুখী হতে থাকে। বছর শেষে ৫২৩ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছিল ২০২০ সালে।
অটেক্সার তথ্যানুযায়ী, মোটাদাগে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা সামগ্রিকভাবে পোশাক আমদানি যে হারে বাড়িয়েছেন, সেটিকেও ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশের রপ্তানি। তাতে প্রথমবারের মতো দেশটিতে ১ বছরে ৭ বিলিয়ন বা ৭০০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানির মাইলফলক অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে।
বিজিএমইএর সাবেক সহসভাপতি মাহমুদ হাসান খান গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘চীন ও ভিয়েতনাম থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রচুর ক্রয়াদেশ বাংলাদেশে স্থানান্তরিত হয়েছে। আফ্রিকা অঞ্চলের দেশগুলোও ক্রেতাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী উৎপাদন করতে পারছে না। তাই সব মিলিয়ে আমাদের উদ্যোক্তারা ভালো ক্রয়াদেশ পাচ্ছেন। করোনার নতুন ধরন অমিক্রনে যেহেতু মৃত্যুর খবর নেই, তাই আপাতত মহামারি নিয়ে দুশ্চিন্তা কম। আগামী মাসগুলোতেও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানিতে ভালো প্রবৃদ্ধি থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়লেও প্রতিযোগী দেশ চীন ও ভিয়েতনামও খারাপ করছে না। শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ চীন চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে এই বাজারে ১ হাজার ৬০০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। তাদের প্রবৃদ্ধি ২৫ শতাংশের একটু বেশি। সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানিতে চীনের হিস্যা ২৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
দ্বিতীয় শীর্ষ রপ্তানিকারক ভিয়েতনাম রপ্তানি করেছে ১ হাজার ২১৫ কোটি ডলারের পোশাক। তাদের প্রবৃদ্ধি সাড়ে ১৩ শতাংশ। ভিয়েতনামের হিস্যা ১৮ শতাংশ। আর চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে ভারত ৩৪৫ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। তাদের রপ্তানি বেড়েছে পৌনে ৩৪ শতাংশ।