নিজস্ব প্রতিবেদক
জামায়াতে ইসলামী কোনো গতানুগতিক রাজনৈতিক দল নয় উল্লেখ করে দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, জামায়াত বাংলাদেশের রাজনীতিতে ব্যতিক্রমী আন্দোলন ও সংগ্রামের নাম। জামায়াত ব্যতিক্রম, আমরা যে কাজই করি তা মনগড়া কোনো কাজ নয়, কোরআন সুন্নাহ আমাদের গাইডলাইন।
রোববার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বনানী কাঁচাবাজার সড়কে ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের গুলশান পশ্চিম থানা আয়োজিত এক কর্মী ও সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সেলিম উদ্দিন বলেন, জামায়াত গণমানুষের কল্যাণ, আদর্শ জাতি গঠন, সুন্দর ও প্রগতিশীল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা এবং দেশকে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র পরিণত করে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা যেসব কাজ করছি সব ক্ষেত্রে আমরা গাইডলাইন ও দিকনির্দেশনা গ্রহণ করছি পবিত্র কালামে হাকিম ও রাসুল (সা.) সুন্নাহ তথা জীবনাদর্শ থেকে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কালামে হাকিমের সুরা আল ইমরানের ১০৪নং আয়াতে ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে অবশ্যই এমন একটি দল থাকবে; যারা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ দেবে এবং অসৎ কাজের নিষেধ করবে। আর এরাই হবে প্রকৃত সফলকাম’। জামায়াত সেই নির্দেশনা মোতাবেকই দেশকে একটি আদর্শ কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়।
জামায়াত আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ অনুসারে একটি আদর্শিক রাজনৈতিক দল ও ইসলামী আন্দোলন গড়ে তুলেছে দাবি করে ছাত্র শিবিরের সাবেক এই কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য সাময়িক নয়। যেনতেনভাবে ক্ষমতায় যাওয়া বা ক্ষমতায় গিয়ে দেশের মানুষের সম্পদ লুট করে নিজেদের আখের গুছিয়ে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করাও আমাদের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য নয়। রাজনীতিকে নিজেদের জীবন-জীবিকার অনুষঙ্গও আমরা মনে করি না, বরং গণমানুষের কল্যাণ ও আর্ত-মানবতার মুক্তিই আমাদের রাজনীতির কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য। তিনি সেই শান্তির সমাজ বিনির্মাণে সবাইকে জামায়াতের হাত শক্তিশালী করার আহ্বান জানান।
মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের মানুষ বিগত ৫৩ বছর বিভিন্ন দলকে বাংলাদেশের ক্ষমতায় এনেছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ দুর্নীতি, অন্যায়, অবিচার থেকে মুক্তি পায়নি।
তিনি মাত্র পাঁচ বছরের জন্য জামায়াতকে ক্ষমতায় আনার আহ্বান জানিয়ে বলেন, জামায়াত যদি ক্ষমতায় আসে বাংলাদেশের সব দলকে সঙ্গে নিয়ে একটি অংশগ্রহণমূলক জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
জামায়াতের এ নেতা আরও বলেন, বাংলাদেশ থেকে স্বৈরশাসক বিতাড়িত হয়েছে। আর কোনো স্বৈরশাসক, দুর্নীতিবাজ চাঁদাবাজদের বাংলাদেশে কোনো ঠাঁই হবে না।
মহানগরী আমির সেলিম বলেন, গোটা দেশেই জামায়াতের বিশাল জনশক্তি রয়েছে। আমরা চাকরিবাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য করে নিজের পকেট থেকে পার্টিকে চাঁদা দিই। আমরা এটা এয়ানত বলে থাকি। আর সে অর্থ দিয়েই আমাদের সংগঠন চলে। আমরা দল চালাতে বা নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থে চাঁদাবাজি, সম্পদ লুণ্ঠন ও দখলবাজি করি না। জামায়াতের কোনো সমর্থক হোটেলে খেয়ে বিল দেয়নি বা কারো কাছে জোর করে টাকা আদায় করেছে এমন একটি নজিরও কেউ দেখাতে পারবে না।
গুলশান পশ্চিম থানা আমির মাহমুদুর রহমান আজাদের সভাপতিত্বে ও থানা কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ইয়াসিন আরাফাত।