যাওয়ার আগে অ্যাডহকে শতাধিক চাকরিপ্রত্যাশীকে নিয়োগ দিয়ে গেলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্বাক্ষরিত একটি তালিকা জাগো নিউজের হাতে এসেছে।
উপাচার্য স্বাক্ষরিত ওই নিয়োগ তালিকায় ৮৫ জন উচ্চমান সহকারী, ১১ শিক্ষক ও ইমামসহ বেশ কয়েকজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীসহ ৪৭ জনের নাম রয়েছে।
উপাচার্য ভবনে গিয়ে দেখা যায়, চাকরিতে যোগদানের চিঠিতে স্বাক্ষর করছেন চাকরিতে নতুন যোগদান করা ব্যক্তিরা।
ইস্যুকৃত নিয়োগপত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম স্বাক্ষর করেননি। তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বলে ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে।
অব্যাহতির বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমি এখন অজ্ঞাতবাসে (অজ্ঞাত জায়গায় নিজেকে আড়াল করে রেখেছি) আছি। আমার পরিবারও জানে না কোথায় আছি। কোনো অবৈধ কার্যক্রমের সঙ্গে থাকব না বলেই অজ্ঞাতবাসে আছি।’
নিয়োগপত্রে ইউসুফ আলী নামের একজন সহকারী রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষর রয়েছে বলে জানা গেছে।
এর আগে দুপুর দেড়টার দিকে পুলিশ পাহারায় ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান। এর আগে দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে এই নিয়োগ নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায় মহানগর ছাত্রলীগ। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে গেলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সংঘর্ষ ও পুলিশের লাঠিচার্জে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চাকরিপ্রত্যাশী মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আব্দুল্লাহ আল মামুন ও সেকশন অফিসার মাসুদের ওপর হামলা চালান। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
এসময় রাবি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা এগিয়ে এলে তাদের ওপরও হামলা চালানো হয়। পরে রাবি ছাত্রলীগ সংগঠিত হয়ে ধাওয়া করলে মহানগর ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে মহানগর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে যান।
রাবির সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও সেকশন অফিসার কামরুজ্জামান চঞ্চল বলেন, ‘আজ রাবি ভিসি আব্দুস সোবহানের মেয়াদের শেষ দিন। তিনি চাকরিপ্রত্যাশী ১২৫ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে নিয়োগ দিয়েছেন বলে প্রচার হলে মহানগর ছাত্রলীগের চাকরিপ্রত্যাশীরা ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন। এসময় তারাও চাকরি দাবি করেন এবং তাদের এমন ভাব যেন এখনই তাদের নিয়োগ দিতে হবে। এনিয়ে সেকশন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তারা হামলা চালান। এসময় আমি এগিয়ে গেলে তারা আমাকেও লাঞ্ছিত করেন।’
তিনি বলেন, ঘটনার সময় রাবি ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী সেখানে ছিলেন। তারা এগিয়ে এলে তাদের ওপরও হামলা করা হয়। পরে রাবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সংগঠিত হয়ে তাদের ধাওয়া দেন।