আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
একজন নাবিক প্রথম আলোকে জানান, কত দিন থাকতে হবে, কে জানে? লম্বা সময় থাকতে হলেও যাতে সমস্যা না হয়, সে জন্য নিজেরাই খাবারের তালিকায় নিয়মিত মেনু থেকে এক-দুটি বাদ দিয়ে খেতে শুরু করেছেন, যাতে খাবার বাঁচিয়ে বেশি দিন খাওয়া যায়। বিশুদ্ধ পানি শুধু পান করা ও রান্নার কাজে ব্যবহার করছেন নাবিকেরা। অন্য সব কাজে এখন নদীর পানি ব্যবহার করতে শুরু করেছেন তাঁরা। নদীর পানিতে লবণাক্ততা কম থাকায় পান করা ও রান্নার বাইরে অন্য কাজে ব্যবহার করা যাচ্ছে। জাহাজে মজুত থাকা খাবার এভাবে রেশনিং করে দেড় মাসের বেশি সময় চালিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।
জাহাজটির মাস্টার হলেন ক্যাপ্টেন জি এম নুর ই আলম। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। নাবিকদের সঙ্গে কথা হলেও তাঁরা নাম প্রকাশ করতে চাননি। তবে নাবিকেরা তাঁদের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। স্বজনদের কাছেও নাবিকেরা আতঙ্কের কথা জানিয়েছেন।
নাবিকেরা জানিয়েছেন, আটকে পড়ার পর থেকে বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর সুমন মাহমুদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন তাঁদের সঙ্গে। নাবিকেরা যাতে মনোবল না হারান, সে জন্য কর্মকর্তারা জ্যেষ্ঠ নাবিকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।
তুরস্ক থেকে যখন জাহাজটি ইউক্রেনের বন্দর থেকে পণ্য বোঝাইয়ের জন্য রওনা হয়, তখন যুদ্ধ প্রায় আসন্ন। সেখানে পৌঁছানোর এক দিনের কম সময়ে রাশিয়ার হামলা শুরু হয়। এরপর বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন থেকে পণ্য বোঝাই না করে ফেরত যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল জাহাজের মাস্টারকে। কিন্তু ততক্ষণে ইউক্রেন বন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মাইন পুঁতে রাখা হয়েছে বের হওয়ার পথে পানির নিচে। বন্দর চ্যানেল থেকে বের হয়ে কৃষ্ণসাগরে যাওয়ার দুই প্রান্তে রাশিয়া ও ইউক্রেনের ফায়ারিং জোন। অর্থাৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বের হওয়ার সুযোগ নেই।
এমন পরিস্থিতিতে নাবিকদের উদ্ধারে পদক্ষেপ নিয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) নির্বাহী পরিচালক (বাণিজ্য) পীযূষ দত্ত প্রথম আলোকে বলেন, ‘বেরিয়ে যাওয়াটা এখন সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। সেটি করা যাবে না। জাহাজটি এখন যেখানে আছে, সেখানে এ মুহূর্তে সবচেয়ে নিরাপদ। এরপরও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পোলান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাসসহ আমরা সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি, যাতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া যায়।’
বিএসডি/ এফএস