নিজস্ব প্রতিবেদক
আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্যপদ থেকে সম্প্রতি অব্যাহতি পাওয়া হেলেনা জাহাঙ্গীর মুখ খুলতে শুরু করেছেন। বর্তমানে গুলশান থানায় দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তিন দিনের রিমান্ডে রয়েছেন বিতর্কিত এই নেত্রী।
র্যাব বলছে, তিন দিনের জিজ্ঞাসাবাদের প্রথম দিনেই মুখ খুলতে শুরু করেছেন হেলেনা। বেশকিছু বিস্ফোরক ও চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন তিনি। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে পরবর্তীতে ব্ল্যাকমেইল করে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতেন বলেও জানায় র্যাব।
তিনি বলেন, হেলেনা জাহাঙ্গীরের স্বামী ১৯৯০ সাল থেকে গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। সেখান থেকে তিনি পার্টনারশিপে ব্যবসা শুরু করেন। বর্তমানে তিনি পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের মালিক। আর হেলেনা টেলিভিশনে চাকরি দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে বিভিন্ন পরিমাণ টাকা আদায় করেছেন। আর এসব অপকর্মের দায় চাপিয়েছেন তার অফিস স্টাফদের ওপর। এমনকি তার ১৫ থেকে ১৬টি ফ্ল্যাট এবং ৬ থেকে ৮টি গাড়ি রয়েছে বলেও জানিয়েছে হেলেনা।
তবে, জিজ্ঞাসাবাদে ফ্ল্যাট কিংবা গাড়ির সংখ্যার প্রকৃত কোনো তথ্য দিতে পারেননি বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
এর আগে শুক্রবার হেলেনাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর বিকেলে ব্রিফিংয়ে র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন জানিয়েছিলেন, হেলেনা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে ১৩ টি ক্লাবের সখ্যতা রয়েছে। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে চাঁদাবাজি করতেন।
র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘হেলেনা জাহাঙ্গীর একজন উচ্চাভিলাষী মহিলা। বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দিয়ে নিজের উদ্দেশ্য হাসিল করতো। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিদেশে বসে সেফাতুল্লাহ নামে এক ব্যক্তি যে অশ্লীল শব্দ উচ্চারণ করতো সেই ব্যক্তির সঙ্গে অবৈধ লেনদেনসহ নিয়মিত যোগাযোগ রাখত হেলেনা জাহাঙ্গীর।’
খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘যেসব অবৈধ মদের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে সবকিছু হেলেনা জাহাঙ্গীরের নিজ কক্ষে ছিল। হেলেনা জাহাঙ্গীর এসব বিষয় স্বীকার করেছেন বলে জানান খন্দকার আল মঈন। পরে তাকে গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হয়।
ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে অবৈধ মাদক, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়।
শুক্রবার দুপুরে র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক জানান, হেলেনা জাহাঙ্গীরের জয়যাত্রা আইপি টেলিভিশনের কোনো বৈধ কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবারের (২৯ জুলাই) অভিযানে মিরপুরের জয়যাত্রা অফিস থেকে গুরুত্বপূর্ণ নথি সংগ্রহ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। পরে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব সদর দপ্তরে নেওয়া হয়।