নিজস্ব প্রতিবেদক,
সুস্থতা আল্লাহ তায়ালার অনেক বড় নেয়ামত। তেমনি অসুস্থতাও আল্লাহর নেয়ামত। মহান আল্লাহ পাক অসুখ-বিসুখ এবং বিপদ-আপদ দিয়ে পরীক্ষা করেন। বিভিন্ন হাদিসে রোগ-শোক ও বালা-মসিবতের তাৎপর্য ও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। অসুস্থতা দেহের জাকাত স্বরূপ। এর দ্বারা শরীর গুনাহমুক্ত হয়, পাক-পবিত্র হয়। আল্লাহর কাছে বান্দার মর্যাদা বুলন্দ হয়। ভবিষ্যত জীবনের জন্য উপদেশ গ্রহণের সুযোগ তৈরি হয়।
হাদিস শরীফে রোগী দেখার অসংখ্য ফজিলতের কথা বর্ণিত হয়েছে। হজরত আলী (রা.) বর্ণনা করেন, আমি রাসূল (সা.) কে বলতে শোনেছি, যে ব্যক্তি সকালবেলা কোনো অসুস্থ মুসলমানকে দেখতে যায়, সত্তর হাজার ফেরেশতা বিকেল পর্যন্ত তার জন্য দোয়া করতে থাকে। আর বিকেলে রোগী দেখতে গেলে পরদিন সকাল পর্যন্ত সত্তর হাজার ফেরেশতা দোয়া করে। (-সুনানে তিরমিজি: ৯৬৭)
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো বিপদগ্রস্ত বা রোগী দেখে এই দোয়া পাঠ করে সে কখনো এমন বিপদ কিংবা ব্যাধিতে আক্রান্ত হয় না।
রোগী দেখতে গিয়ে করণীয় হলো তার সুস্থতার জন্য দোয়া করা। হাদিসে রোগী দেখার অনেক দোয়া বর্ণিত হয়েছে। আসুন তন্মধ্যে অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ দুটি দোয়া শিখে নেই।
প্রথম দোয়া
রোগীর কাছে গিয়ে সাত বার নিচের দোয়াটি পড়বেন,
أسأل الله العظيم رب العرش العظيم أن يشفيك.
উচ্চারণ:আসআলুল্লাহাল আজিমা, রাব্বাল আরশিল আজিমি, আঁইয়্যাশফিয়াক’।
অর্থ: ‘আমি সুমহান আল্লাহ, মহা আরশের প্রভুর নিকট তোমার আরোগ্য (সুস্থতা) প্রার্থনা করছি’
দোয়াটির ফজিলত
এই দোয়া ফজিলত সম্পর্কে হাদিস শরীফে এসেছে,
عن ابن عباس رضي الله عنهما عن النبي صلى الله عليه وسلم:من عاد مريضاً لم يحضر أجله فقال عنده سبع مرارٍ: أسأل الله العظيم رب العرش العظيم أن يشفيك، إلا عافاه الله من ذلك المرض.
أخرجه أبو داود ٣١٠٦، والترمذي ٢٠٨٣،والنسائي في عمل اليوم والليلة ١٠٤٨,
অর্থ: হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি এমন কোনো রুগ্ন মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, যার এখনো মৃত্যুর সময় উপস্থিত হয়নি এবং তার নিকট সাতবার এই দোয়াটি বলবে: আসআলুল্লাহাল আজিমা, রাব্বাল আরশিল আজিমি, আঁইয়্যাশফিয়াক’ আল্লাহ তাকে সে রোগ থেকে মুক্তি দান করবেন।’ (আবু দাউদ শরীফ ৩১০৬, তিরমজি শরীফ ২০৮৩, নাসায়ী শরীফ ১০৪৮)
দ্বিতীয় দোয়া
রোগী দেখে নিচের দোয়াটি পড়বেন।
الحمد لله الذي عافاني مما ابتلاك به و فضلني على كثير من خلقه تفضيل.
উচ্চারণ : ‘আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি আ-ফানি মিম্মাবতালাকা বিহি ওয়া ফাদদলানি আলা কাছিরিম মিম্মান খলাকা তাফদ্বীলা।’
অর্থ: ‘সকল প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার, তিনি তোমাকে যে ব্যাধিতে আক্রান্ত করেছেন, তা থেকে আমাকে নিরাপদ রেখেছেন এবং তার অসংখ্য সৃষ্টির ওপর আমাকে সম্মান দান করেছেন।’
দোয়াটির ফজিলত
যে ব্যক্তি কোনো রোগাক্রান্ত বা বিপদগ্রস্ত লোককে প্রত্যক্ষ করে এই দোয়া পড়বে সে ওই ব্যাধিতে কখনো আক্রান্ত হবে না। বিশ্বনবী (সা.) ইরশাদ করেন।
و عن أبي هريرة رضي الله عن النبي صلى الله عليه و سلم قال : ” من رأى مبتلى فقال : الحمد لله الذي عافاني مما ابتلاك به و فضلني على كثير من خلقه تفضيلا. لم يصيبه ذلك البلاء ” قال الترمذي حديث حسن- الترمذی ٣٤٣٢,
অর্থ: আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো রোগাক্রান্ত বা বিপদগ্রস্ত লোককে প্রত্যক্ষ করে বলে, ‘ আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি আ-ফানি মিম্মাবতালাকা বিহি ওয়া ফাদদলানি আলা কাছিরিম মিম্মান খলাকা তাফদিলা’, সে ওই ব্যাধিতে কখনো আক্রান্ত হবে না।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৩২)
মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সকল হাদিস এবং এর ফজিলত বুঝে আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন